কাঁথি, পূর্ব মেদিনীপুর : তৃণমূলে থাকা কালীন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে কায়েম ছিল কাঁথির অধিকারী পরিবারের একচ্ছত্র রাজত্ব। তৃণমূলপর হাত ধরে বাবা শিশির কাঁথির সাংসদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সেজ ছেলে দিব্যেন্দু তমলুকের সাংসদ, ছোট ছেলে সৌমেন্দু কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও প্রশাসক, মেজ ছেলে শুভেন্দু নন্দীগ্রামের বিধায়ক ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর দাদার পথ অনুসরণ করে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান ছোট ভাই সৌমেন্দু। তবে বাবা শিশির ও সেজ ভাই দিব্যেন্দু এখনও তৃণমূলের সাংসদ। বর্তমানে শুভেন্দু রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হলেও জেলা বিজেপিতে অফিসিয়ালি ভাবে অধিকারী পরিবারের কেউ এতদিন জায়গা পাননি।
তবে এবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিজেপি দলে পদাধিকারী হিসেবে ঢুকে পড়লেন সৌমেন্দু অধিকারী। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদ্য প্রকাশিত তালিকায় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সৌমেন্দুকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তৃণমূলের পর এবার বিজেপিতেও অধিকারী রাজ কায়েম হওয়ার সূচনা হয়ে গেল।
এই বিষয়ে জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটার মামুদ হোসেনের যুক্তি, “এটা অধিকারী পরিবারের বৈশিষ্ট। ওনারা যেখানেই যান সেখানে ধাপে ধাপে ক্ষমতার কেন্দ্রে জায়গা করে নেন। এই দলটাও এবার অঊিকারী পরিবার কেন্দ্রীক হয়ে পড়বে তাে কোনও সন্দেহ নাই”। তবে মামুদের দাবী, “অধিকারী পরিবারের দাপট কাঁথিতে শেষ হয়ে গিয়েছে। ওনারা তৃণমূলের বিরোধী দলে আছেন। যে পদেই থাকুন তাতে তৃণমূলের কিছু এসে যায় না। সামনের পুরসভা নির্বাচনে ওরা হারিয়ে যাবে”।
সৌমেন্দু অধিকারীর স্পষ্ট জবাব, ” বিজেপিতে অধিকারী পরিবারের যাত্রা শুরু বলাটা ঠিক হবে না। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে ডিসেম্বরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। সে সময় জেলা কমিটিতে যোগ দিয়ে বিধানসভার জন্য লড়াই করেছি। যার ফলে কাঁথিতে বিজেপি ভালো ফল করেছে”। সৌমেন্দুর দাবী, ” এবার সেই লড়াইয়ের পুরস্কার স্বরূপ দলীয় নেতৃত্বরা আমার ওপর নতুন দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন। আমার এখন মূল লক্ষ্য সামনের পুরসভা নির্বাচনে কন্টাই ও এগরা পুরসভার জয় ছিনিয়ে নেওয়া। সেই লক্ষ্যেই কাজে ঝাঁপাব” বলে দাবী করেছেন অধিকারী পরিবারের ছোট কর্তা।