নিউজবাংলা ডেস্ক, রানাঘাট : ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী। সিপিএমে থাকাকালীন তিনি দলের হোলটাইমার ছিলেন। পেশা বলতে কিছুই নেই। গত লোকসভা নির্বাচনের সময় তিনি দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে চাকদহ কেন্দ্র থেকে জয়ী হন।
পরীক্ষা না দিয়েই কল্যাণী এইমসে চাকরি পেয়েছেন পুত্রবধূ অনসূয়া ঘোষ ধর৷ এই অভিযোগ ঘিরে ইতিমধ্যে বেকায়দায় চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিমচন্দ্র ঘোষ। এবার সম্পত্তির উত্তরোত্তর বৃদ্ধি নিয়ে ফাঁপরে পড়লেন সিপিএম জমানার এই প্রাক্তন মন্ত্রী। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা সামনে এনে দলীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন বিজেপির নিচুতলার কর্মীরাই। তাঁদের অভিযোগ, শেষ ১৫ বছরে বঙ্কিমবাবুর সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে অন্তত ৭ গুণ। বর্তমানে তিনি কোটিপতি।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৬ সালে বঙ্কিমবাবুর ১৩ লক্ষ ৭২ হাজার ৭৭৭ টাকার সম্পত্তি ছিল। সোনার গয়না ছিল পাঁচ ভরি। এছাড়া হালিশহরে প্রায় এক কাটা জমি ও দীঘায় তিনটি জমি। বাম শিবির ছেড়ে রাম শিবিরে নাম লেখানোর পরই বৃদ্ধি পেতে থাকে বঙ্কিমবাবুর সম্পত্তির পরিমাণ।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় তিনি যে হলফনামা জমা দেন, তাতে দেখা যাচ্ছে সম্পত্তির পরিমাণ ১ কোটি ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার ৪৫৬টাকা। বেড়েছে সোনার পরিমাণ। এছাড়া দু’টি কৃষি জমি, হালিশহরে দু’টি চাষযোগ্য জমি, দীঘায় একটি ব্যবসায়িক ও একটি বসবাসকারী ভবন, কলকাতার মানিকতলায় একটি বহুতলের ফ্ল্যাটও স্থাবর সম্পত্তিতে যুক্ত হয়েছে।
চাপের মুখে পড়ে ওই হলফনামা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন চাকদহের বিজেপি বিধায়ক। বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে আমি যদি এমন হলফনামা দিয়ে থাকি এবং তার যদি প্রমাণ মেলে, তাহলে আমি পদ ছেড়ে দেব।’ একইসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘দীঘায় আমার কোনও সম্পত্তি নেই। যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারেন, তাহলে তাঁকেই ওই সম্পত্তি লিখে দেব।’ বিধায়ক ঘনিষ্ঠদের দাবি, ‘নদীয়ার হরিণঘাটা ব্লকে দীঘা মৌজা রয়েছে। সেখানে বঙ্কিমবাবুর অনেক জমি-জমা রয়েছে। হলফনামায় হয়তো সেই সম্পত্তির কথাই উল্লেখ রয়েছে। তবে সমুদ্র সৈকত দীঘায় বিধায়কের কোনও হোটেল কিংবা জমি আছে কি না, তা জানা নেই।’
তবে এখানেই শেষ নয়। বিধায়কের স্ত্রী ও পুত্রের চাকরি পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির নিচুতলার কর্মীরা। জানা গিয়েছে, ২০০১ সালে মৌলানা আবুল কালাম ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে কাজে যোগ দেন বঙ্কিমবাবুর স্ত্রী। আর কয়েক বছর আগে কল্যাণীর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চে চাকরি পেয়েছেন বিধায়কের পুত্র সৌভিক ঘোষ।
এনিয়ে বিধায়কের প্রতিক্রিয়া, ‘স্ত্রী ও ছেলে বহু বছর ধরেই কাজ করছেন। এটা নতুন নয়। যাঁরা এখন এনিয়ে অভিযোগ করছেন তাঁরাই প্রমাণ দিন, কীভাবে ওঁদের চাকরি হয়েছে। অভিযোগ যে কেউ করতে পারেন। কিন্তু তার সত্যতা থাকা প্রয়োজন।’
সংবাদ সূত্র – বর্তমান পত্রিকা
মোবাইলে নিউজ আপডেটপেতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ দিন, ক্লিক করুন Whatsapp