নিউজবাংলা ডেস্ক : মিলল না রক্ষাকবচ। কাঁথি পুরসভার গোডাউন থেকে ত্রিপল চুরির ঘটনায় আগাম কোনও রক্ষাকবচ পেলেন না শুভেন্দু অধিকারী ও ছোটভাই পুরসভার প্রাক্তন প্রশাসক সৌমেন্দু। এই ঘটনায় তাঁরা জড়িত নয় দাবী জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আগাম রক্ষাকবচের আবেদন করেছিলেন দুই বিজেপি নেতা। তদন্তের নামে তাঁদের যাতে গ্রেফতার করা না হয় তার জন্যই এই পদক্ষেপ।
তবে হাইকোর্ট সেই আবেদন মেনে আগাম কোনও রক্ষাকবচ দিতে রাজি হল না বলেই সূত্রের খবর। পরিবর্তে রক্ষাকবচ সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত কাঁথি থানায় দায়ের হওয়া ত্রিপল চুরি মামলার তদন্তে পুলিশকে সহযোগিতা করার কথা জানিয়েছেন মহামান্য বিচারক। এরফলে তদন্তের প্রয়োজনে পুলিশ গ্রেফতার করলেও তা আটকানোর পথ রইল না বলেই জনপ্রিয় নিউজ চ্যানেল টিভি৯ বাংলার খবরে দাবী জানানো হয়েছে।
কি ঘটেছিল সেদিন?
কাঁথি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য রত্নদ্বীপ মান্না পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, গত ২৯ মে দুপুর নাগাদ কাঁথি পুরসভার ডরমেটরি বিল্ডিংযের গোডাউন থেকে অবৈধ ভাবে ত্রিপল তুলে নিয়ে যাচ্ছিল দুটি গাড়ি। অধিকারী পরিবারে ঘনিষ্ঠ পুরসভার দুই কর্মী হিমাংশু মান্না ও প্রতাপ দে যখন এই কান্ড ঘটাচ্ছিল সে সময় তাঁদের পাহারা দিচ্ছিল সিআইএসএফ-এর দুই সশস্ত্র জওয়ান।
এই জওয়ানরা আবার অধিকারী পরিবারের দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োজিত। গোটা ঘটনা নিয়ে পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানান রত্নদ্বীপ। শুভেন্দু ও সৌমেন্দু’র মদতে এই ঘটনা বলেও অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন রত্নদ্বীপ।
এই অভিযোগের পরেই ত্রিপল চুরির তদন্তে নেমে প্রতাপ দে’কে গ্রেফতার করে কাঁথি থানার পুলিশ। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে দুই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ঘটনার সময় হাজির ছিল। কিন্তু কোন ক্ষমতাবলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা ত্রিপল চুরির সময় হাজির ছিল তা জানতে জোরদার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এরই পাশাপাশি ত্রিপল চুরি কান্ডে অন্যান্যদের সঙ্গে দুই হেভিওয়েট বিজেপি নেতা শুভেন্দু ও সৌমেন্দুর নামেও মামলা শুরু হয়েছে। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ত্রিপল চুরির ঘটনায় অপর অভিযুক্ত হিমাংশু মান্না পুলিশের খাতায় পলাতক বলে জানা গেছে।
এই হিমাংশু’কে গত কয়েক বছর ধরে শুভেন্দু অধিকারীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই চিনত কাঁথি সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনৈতিক মহল। জেলা জুড়ে শুভেন্দু অধিকারীর নানান কর্মকান্ড পরিচালনায় প্রায়ই দেখা যেত তাঁকে। পুরসভা সূত্রে খবর, বিগত বোর্ডের সময়ে কেনা ত্রিপলগুলিকে হাতাতে অতিসক্রিয়তাই কাল হল হিমাংশু’র।
তবে এই বিষয়ে পরবর্তীকালে শুভেন্দুর মন্তব্য ছিল, যে কাউকেই তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে দেখানো আসলে মিডিয়ারই প্রচার। এই চুরির ঘটনায় তাঁদের কোনও যোগ নেই বলে দাবী করেন বিজেপি বিধায়ক।