আনিসের খুনের প্রতিবাদে পার্ক সার্কাস এলাকায় মানব বন্ধন |
নিউজবাংলা ডেস্ক : শুক্রবার রাতে হাওড়ার আমতার বাসিন্দা ISF ছাত্রনেতা আনিস খানের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে তিন তলার ছাদ থেকে ছুঁড়ে ফেলে নৃসংস ভাবে খুনের অভিযোগ ওঠে পুলিশের পোশাক পরা ৪ দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা আনিস এলাকায় প্রতিবাদী কন্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত। তাঁকে এভাবে নৃসংস খুনের প্রতিবাদে শনিবার সন্ধায় উত্তাল হল কলকাতার রাজপথ।
এদিন পূর্ব ঘোষণা মতোই আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাস থেকে মিছিল শুরু করে। তবে সেই মিছিল প্রথম দিকে শান্তিপূর্ণ থাকলেও পরে পুলিশ মিছিলের পথ আটকে দিলেই পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তি বেঁধে যায় প্রতিবাদী ছাত্রছাত্রীদের। রাস্তার পাশে থাকা গার্ডরেলগুলি ফেলে রাস্তা অবরোধ করা হয়। এরপরেই মানব বন্ধন শুরু করেন তাঁরা।
তবে এই সময় ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকায় সন্ধ্যে ৭টা থেকে রাস্তা অবরুদ্ধ করে দেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের একটাই দাবী, পুলিশের পোশাক পরে যারা আনিশকে নৃসংস খুন করল তাঁদের দ্রুত চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে। তবে ইতিমধ্যে হাওরার পুলিশ সুপার সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, যারা পুলিশের পোশাকে গিয়েছিল তারা কেউই পুলিশের লোক না।
যদিও আনিসের বাবা সহ পরিবারের দাবী, গতকাল রাতে পুলিশ পরিচয়ে দুস্কৃতীরা তাঁদের দরজা খুলতে বলে। দরজা খুলতেই পুলিশের পোশাক পরা একজন আনিসের বাবার ওপর বন্দুক ঠেকিয়ে রাখে। সিভিকের পোশাকে থাকা আরও ৩ জন আনিসকে টেনে তিন তলার ছাদে নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে টেলে নীচে ফেলে দেয়। এরপরেই অপারেশান সাকসেসফুল জানিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায়।
গুরুতর অবস্থায় আনিসকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে জানান। আজ মৃতদেহের ময়না তদন্ত হয়। প্রাথমিক রিপোর্টে আনিসের মাথার পেছনে গভীর চোটের পাশাপাশি পায়েও চোট রয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু ঠিক কোন কারনে আনিসকে খুন করা হল তা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত রয়েছে।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার ও পুলিশকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর অভিযোগ, পুলিশের পোশাক পরে কোনও সাধারণ লোক আসতে পারে না। শাসক দলের যোগসাজসেই আনিস খুন হয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন শুভেন্দু। যদিও আনিসের সিএএ বিরোধী আন্দোলনের ইস্যুকে হাতিয়ার করে বিজেপিকেই কাঠগড়ায় তুলেছে তৃণমূল। একধাপ এগিয়ে এই ঘটনায় ভিন রাজ্যের দুষ্কৃতীদের জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ উসকে দিয়েছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তবে ঘটনার দ্রুত তদন্ত হোক চাইছেন সকলেই।