এগরা : বিজেপির বাধায় আটকে গেল তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রতিনিধি দল। বুধবার দুপুর নাগাদ এগরার খাদিকুল গ্রামে গিয়েছিলেন পরিবেশ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, দোলা সেন, সৌমেন মহাপাত্র ও স্থানীয় বিধায়ক তরুণ মাইতি। কিন্তু বিজেপির একটানা শ্লোগান ও বিক্ষোভের জেরে কর্মসূচী মাঝপথে থামিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন তৃনমূল নেতৃত্বরা।
ক্ষুব্ধ মানস ভুঁইয়া জানান, “আমরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ঘটনাস্থলে এসেছিলাম। কিন্তু কিছু রাউডি অশান্তি পাকানোর ছক কষছিল। আমরা কোনও প্ররোচনায় পা দিইনি। নিহত ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আমরা ফিরে যাচ্ছি”।
প্রসঙ্গতঃ মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ এগরার ১ ব্লকের সাহারা গ্রাম পঞ্চায়েতের খাদিকুল গ্রামে ভানু বাগের অবৈধ বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন ৯ জন গ্রামবাসী। কিন্তু সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই শুরু হয়ে গেল চরম রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। গোটা ঘটনায় একে অন্যকে দায়ী করে পথে নেমেছে বিজেপি ও তৃণমূল।
বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবী জানান শুভেন্দু অধিকারী। পুলিশকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ঘটনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন তিনি। বাজি বিস্ফোরণে নিহত ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখাও করেন তিনি।
এদিকে শুভেন্দু ফিরে যাওয়ার কিছু সময় বাদেই ঘটনাস্থলে হাজির হন পরিবেশ মন্ত্রী মানস সহ তৃণমূলের নেতৃত্বরা। তাঁরা ঘটনাস্থলের কাছে এসে যখন গ্রামবাসীদের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা পৌঁছে দিচ্ছিলেন ঠিক সেই সময় আচমকাই পেছন থেকে দলে দলে চলে আসে বিজেপি নেতা কর্মীরা।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে শ্লোগান তুলতে তুলতে রাস্তা ঘিরে ধরেন তাঁরা। মানস ও দোলা সেই সময় ভীড় ঠেকে পাশেই একটি বাড়িতে থাকা নিহত ও আহতদের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের জানান, মুখ্যমন্ত্রী আপনাদের পাশে আছে। ঘটনায় যারা জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বার্তা দেন তাঁরা। সেই সঙ্গে নিহত ও আহতদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন মানস ও দোলা।
কিন্তু তাঁদের কথাবার্তার মাঝেই বিজেপির লোকেরা রীতিমতো তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ ও শ্লোগান দিতে শুরু করেন। এর জেরে ক্ষুব্ধ মানস ও দোলা মাঝপথেই কর্মসূচী থামিয়ে দেন। মানস জানান, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ঘটনাস্থলে ছুটে এসেছি আমরা। নিহত ও আহতদের পরিবারের পাশে আছি আমরা এই বার্তা দিতেই এখানে আসা। কিন্তু গণতান্ত্রিক অধিকার ফলিয়ে কিছু লোক চিৎকার করছিল। অকারণে শান্তি বিঘ্নিত করতে চেয়েছে ওরা। আমরা কোনও প্ররোচনায় পা দিইনি”।
মানস আরও জানান, “সবটাই তদন্ত হবে। কেন স্থানীয়রা আগে এই বাজি কারখানার বিরুদ্ধে সরব হয়নি, কার মদতে এই বাজী কারখানা চালাচ্ছিল, পুলিশের ভূমিকা, স্থানীয় পঞ্চায়েতের ভূমিকা কি ছিল সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে”। তাঁর খেদ, “আজ কিছু লোক রাউডিজম করার জন্য এখানে ছিল, তবে আমরা মাথা ঠান্ডা রাখতে বলেছি সবাইকে”। দোলা সেন জানান, “আমরা কর্মীদের শান্ত থাকতে বলছি। মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনায় অত্যন্ত মর্মাহত। গোটা ঘটনায় জড়িতরা কঠোর শাস্তি পাবে” আশ্বস্ত করেন তিনি।