তমলুক : রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর খাস তালুকেই নেতা পাচ্ছে না বিজেপি। এমনই অভিযোগ উঠেছে বিজেপির অন্দরে। দীর্ঘদিন ধরেই জেলার ৫টি মন্ডল সভাপতি পদে নির্বাচন করতে ব্যর্থ জেলা বিজেপির নেতৃত্বরা। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগেই রাজ্যজুড়ে সরকার বিরোধী হাওয়া প্রকর করতে দিনরাত লড়াই চালাচ্ছেন শুভেন্দু। অথচ বিজেপির অন্যতম মুখ শুভেন্দুর জেলাতেই মন্ডল সভাপতি নির্বাচনে দীর্ঘসূত্রিতা প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক মহলে।
বিজেপি সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুর বিজেপির দুই সাংগঠনিক জেলা তমলুক ও কাঁথি জুড়ে মোট ৪৪টি মন্ডল কমিটি রয়েছে। সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সভাপতির দায়িত্বে আসার পর রাজ্য জুড়ে জেলা কমিটি ও মন্ডল কমিটি ঢেলে সাজানো হয়েছে। ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের দুই সাংগঠনিক জেলার জেলা সভাপতি বদল হয়েছে। কিন্তু মন্ডল সভাপতি নির্বাচন করতে গিয়েই বাধে বিপত্তি। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা নিজেদের ঘর গুছিয়ে নিলেও তমলুক সাংগঠনিক জেলা বেশ খানিকটা পিছিয়ে পড়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই তমলুক সাংগঠনিক জেলাতেই শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী কেন্দ্র নন্দীগ্রাম অবস্থিত।
বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, এই তমলুক সাংগঠনিক জেলাতেই এখনও পর্যন্ত ৫টি মন্ডল কমিটির সভাপতি নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। যার মধ্যে রয়েছে হলদিয়া, সুতাহাটা, ময়না উত্তর, ময়না দক্ষিণ, তমলুক গ্রামীন প্রভৃতি এলাকা। এই জায়গাগুলোতে সর্ব সম্মতিক্রমে নেতা নির্বাচন করা সম্ভব না হওয়ায় দলের সাংগঠনিক ভিত্তি নিয়েই প্রশ্ন চিহ্ন উঠে গিয়েছে।
শুভেন্দু অধিকারী এই জেলার ভূমিপুত্র হলেও এখানেই বিজেপিকে কয়েক কদম পিছিয়ে থাকতে হচ্ছে। এর পেছনে অনেকেই আবার শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদারের মধ্যে মতভেদ রয়েছে বলে দাবী করছেন। একদিকে বিজেপির একটা অংশ যেখানে শুভেন্দুর হাত ধরে উঠে আসা নেতাদের মন্ডল সভাপতি করতে আগ্রহী সেখানে সুকান্ত মজুমদার নির্বাচিত জেলা সভাপতি তপন ব্যানার্জীর মনোনীত প্রার্থীদের মন্ডল সভাপতি করার প্রস্তাব আসছে বলে খবর।
যদিও বিজেপির তমলুক সাংগঠিক জেলার সভাপতি তপন ব্যানার্জি’র মন্তব্য, “৫টি মন্ডলে সভাপতি নির্বাচন এখনও বাকী আছে। এরজন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বরা বিবেচনা করছেন, আলাপ আলোচনা করছেন। ওপর নেতৃত্ব থেকে সবুজ সংকেত পেলেই এই জায়গাগুলিতে সভাপতির নাম ঘোষণা হবে”।
তবে জেলার রাজনৈতিক মহলের খবর, এই জেলায় যে জায়গাগুলিতে বিজেপির প্রভাব বেশী যেমন হলদিয়া, সুতাহাটা, ময়না, তমলুক প্রভৃতি এলাকা সেখানেই মন্ডল সভাপতি নির্বাচন নিয়ে বিজেপি অন্দরে দ্বন্দ্ব চরমে। এরফলে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপিকে যথেষ্ট বিড়ম্বনায় পড়তে হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।