দিঘা : গরমের হাত থেকে বাঁচতে ছুটির সকালে দিঘার সমূদ্রের উত্তাল ফেনায় গা ভাসাতে ঢল নেমেছে পর্যটকদের। কিন্তু বাদ সেধেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’’। বঙ্গোপসাগর গত কয়েকদিন ধরে দাপিয়ে বেড়ানোর পর আজ যা আছড়ে পড়ছে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের মাঝামাঝি জায়গায়। আর এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সমূদ্রের জলস্তর বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সঙ্গে সমূদ্র উত্তাল হয়ে ওঠার আশংকাও রয়েছে। যার জেরে দিঘা (Digha Update) সহ সংলগ্ন সৈকত নগরীতে বাড়তি সতর্ক প্রশাসন। পর্যটক ও স্থানীয় মানুষদের সুরক্ষার কথা ভেবে রবি ও সোমবার দিঘার সমূদ্র স্নানে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি হল প্রশাসনের তরফে।
প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যে সমূদ্র পারে দিঘা মোহনা কোস্টাল থানার তরফে মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, “আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় মোকার প্রভাবে সমূদ্রের জলস্তর ব্যাপক হারে বাড়ার আশংকা রয়েছে। সেই সঙ্গে সমূদ্র উপকুলে বাতাসের গতিবেগও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই কারনে আগামী ১৫ মে পর্যন্ত পর্যটকদের সমূদ্র স্নানে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও এই সময় সমূদ্রে নামতে বারণ করা হয়েছে। এই সময়ে সমূদ্র থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এবং সমূদ্রে সমস্ত রকম কার্যকলাপ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে”।
দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, ইদের পাশাপাশি রাজ্যের সরকারী স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি চলছে। তারজেরে অন্যান্য সময়ের তুলনায় দিঘায় পর্যটকদের ভীড় ব্যাপক। শনি, রবি ও অন্যান্য ছুটির দিনে এই ভীড় আরও বেশী। এই মুহূর্তে দিঘার হোটেলগুলিতে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে বেশ কয়েকগুন। ঘূর্ণিঝড় বাংলার উপকুলে আসছে না জেনে ভীড় বেড়েছে অনেক বেশী। তবে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার পর দিঘায় বেড়াতে আসা পর্যটকেরা কিছুটা হতাশ।
কোন্নগর থেকে আসা রাহুল পান্ডে, ঠাকুরপুর থেকে আসা দীপালি দে সরকার বা রাজারহাট থেকে আসা সুরেশ শর্মা সকলেই একবাক্যে জানিয়েছেন, “শনিবার দুপুরের পর থেকে দিঘায় প্রশাসনের তৎপরতা অনেকটা বেড়েছে। মাইক প্রচারের পাশাপাশি পর্যটকদের সমূদ্র থেকে তুলে দেওয়া হচ্ছে। আগামী দু’দিনও সমূদ্র স্নান করা যাবে না বলেই প্রচার করা হচ্ছে। এরজন্য আমরা কিছুটা হতাশ। পাড়ে বসে সমূদ্র দেখেই এবার বাড়ি ফিরতে হবে”।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, শনিবার সকাল থেকে বিপুল পর্যটক স্নান করলেও বিকেল থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। বিশেষতঃ জোয়ারের সময় পর্যটকদের সমূদ্রে নামার ক্ষেত্রে নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রশাসন আরও জানিয়েছে, পর্যটকদের সুরক্ষার কথা ভেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সমূদ্র উত্তাল হয়ে উঠলে যাতে কোনও রকম দুর্ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে কড়া নজরদারী রাখা হয়েছে বলে দিঘা থানা ও দিঘা কোস্টাল থানা থেকে জানানো হয়েছে।
দিঘা হোটেল ব্যবসায়ীদের সূত্রে খবর, “এই মুহূর্তে সৈকত শহরে পর্যটকদের ভালো ভিড় রয়েছে। হাঁসফাঁস গরম থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতেই সমূদ্রের জলে ঝাঁপাতে দিঘায় ছুটে এসেছেন তাঁরা। কিন্তু প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার জন্য সমূদ্র স্নান করা যাবে না। তবে পর্যটকদের সুরক্ষার কথা ভেবে প্রশাসন যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা সবাইকে মেনে চলতে হবে” বলেই জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।