এগরা : এগরায় অবৈধ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ভানু বাগের মৃত্যু হয়েছে। উড়িষ্যার রুদ্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত্রি ২টো নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। খবরের সত্যতা জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার অমরনাথ কে.। এর জেরে অবৈধ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯ জন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত দেহের ময়না তদন্তের পর দেহটকে যত দ্রুত সম্ভব জেলায় ফিরিয়ে আনা হবে। এগরায় খাদিকুল গ্রামেই তাঁর শেষকৃত্য হওয়ার কথা।
গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ খাদিকুল গ্রামে অবস্থিত অবৈধ বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। বিশাল ধোঁয়ার কুন্ডলী ছড়িয়ে পড়ে আকাশে। সেই সময় কারখানায় কর্মরত ৮ জনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। ২ জনকে গুরুতর জখম অবস্থায় কলকাতায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে এরই পাশাপাশি বাজি কারখানার মালিক কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু বাগও গুরুতর জখম হন। তবে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে আহত ভানুকে উড়িষ্যার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় তাঁর ছেলে ও ভাইপো।
বালেশ্বরের একটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাত্রি প্রায় ২টো নাগাদ ভানুকে কটকের রুদ্র হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। উড়িষ্যার বালেশ্বরের একটি ঠিকানায় ভুয়ো আধার বানিয়ে কটকের রুদ্র হাসপাতালে ভানুকে কলাপাতা মুড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভানু’র ছেলে ও ভাইপো দাবী করেন, স্থানীয় একটি অনুষ্ঠানবাড়িতে রান্নার সময় সিলিন্ডার ফেটে ঝলসে গিয়েছেন ভানু। তবে তাঁদের এই কারিগুরি পরের দিনই প্রকাশ্যে চলে আসে।
বুধবার বিষয়টি নিয়ে প্রথমে সন্দেহ হয় রুদ্র হাসপাতালের কর্মীদের। কারণ এমন গুরুতর জখম ভানুর সঙ্গে পরিবারের কেউ দেখা করতে না আসা ঘিরেই সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি হয়। খবর যায় স্থানীয় থানায়। কিন্তু ভানুর দেওয়া আধার কার্ডের ঠিকানায় গিয়ে পুলিশ সত্যিটা ধরে ফেলে। এরপরেই উড়িষ্যা পুলিশ বাংলার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনাটি জানায়। বৃহস্পতিবার এ রাজ্যের পুলিশ রুদ্র হাসপাতালে গিয়ে ভানুকে চিহ্নিত করে এবং তাঁদের ওপর নজরদারী শুরু করা হয়। তবে চিকিৎসকরা জানান, দেহের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে ভানুর। তাঁর বেঁচে থাকার আশা অত্যন্ত ক্ষীণ ছিল।
এরপর বৃহস্পতিবার রাত্রি প্রায় ২টো নাগাদ রুদ্র হাসপাতালের চিকিৎসকরা ভানুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতালের এক কর্মী জানান, গতকাল রাত্রি প্রায় ২টো থেকে ৩টের মধ্যে ভানু’র মৃত্যু হয়েছে। পূর্ব মেদনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে. এই খবর নিশ্চিত করেন। এই মুহূর্তে দেহ ময়না তদন্তে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় চলছে বলে পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে। তবে আইনী প্রক্রিয়া সেরে দেহ নিয়ে আসতে অনেকটা সময় লাগবে বলেই সূত্রের খবর।