নিউজবাংলা : মরণাপন্ন অবস্থায় অথবা মৃত্যুর পর চক্ষুদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে মৃত্যুর এক ঘণ্টার পরেই ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করতে হবে। চক্ষুদান সফল করতে এমনই সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্যদপ্তর। ইতিমধ্যে এই সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকাও জারি করেছে স্বাস্থ্যদপ্তর।
স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বক্তব্য, অনেকে চক্ষুদান (Eye Donation) করতে চাইলেও তা সময়ে সংগ্রহ করা হয় না। ফলে দান করা চোখ নষ্ট হয়ে যায়। সে কারণেই চক্ষুদানে ইচ্ছুক মানুষের মৃত্যুর পর দ্রুত এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
স্বাস্থ্যদপ্তরের বক্তব্য, বর্তমানে বিশ্বে সাড়ে চারশো কোটি দৃষ্টিহীন মানুষ আছেন। তাঁদের এক তৃতীয়াংশ ভারতবর্ষের বাসিন্দা। চক্ষুদান সংক্রান্ত সচেতনা না থাকার কারণেই এই চিত্র। এই পরিসংখ্যান উদ্বেগজনক। তবে তা বদলানো সম্ভব। মরণোত্তর চক্ষুদানের মাধ্যমে তা বদলে দেওয়া সম্ভব।
স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বক্তব্য, চক্ষুদান প্রক্রিয়া নিয়ে কিছু জটিলতা আছে। বর্তমানে মৃত্যুর পর চারঘণ্টা বাদে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার নিয়ম। ফলে কেউ আগেভাগে চক্ষুদানের অঙ্গীকার করে রাখার পর আচমকা মারা গেলে চারঘণ্টা বাদে চোখ সংগ্রহ করা হয়। তবে তাতে লাভ হয় না।
কিংবা কোনও ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর মৃতের আত্মীয়রা চোখদানের সিদ্ধান্ত নিলে একই সমস্যা তৈরি হয়। কারণ মৃত্যুর একঘণ্টার মধ্যে চোখের কর্নিয়া সংগ্রহ না করা গেলে, তা আর কাজে আসে না। সে কারণেই মরণোত্তর চক্ষুদানের ক্ষেত্রে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার সময় এগিয়ে আনা হল।
স্বাস্থ্যদপ্তরের নির্দেশনামায় বলা হয়েছে, মরণোত্তর চক্ষুদানের জন্য মৃতের পরিবারকে ভালো করে সচেতন করতে হবে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের। চক্ষুদান মানে গোটা চোখ নিয়ে নেওয়া নয় সেটা বোঝাতে হবে মৃতের পরিবারকে। এর জন্য সচেতনামূলক প্রচারও করা যেতে পারে। তা করলে মানুষের মনে তৈরি হওয়া ভুল ধারণা কাটবে।
বাড়িতেও যদি কারও মৃত্যু হয় তাহলে স্থানীয় প্রশাসন সহযোগিতা করবে। স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, চক্ষুদানের মতো বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকায় এই প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেছেন, ‘মরণোত্তর চক্ষুদানে উৎসাহ দিতে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।’