হলদিয়া : শিল্পশহরে বেসরকারি সংস্থায় শ্রমিক নিয়োগের পদ্ধতিগত ত্রুটির অভিযোগ উঠল। যার প্রেক্ষিতে ওই প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে বেসরকারি সংস্থায় শ্রমিক নিয়োগের জন্য (Haldia Job) শ্রম বিভাগের তরফে জানানো হয়েছিল যে, সরকারি পোর্টালের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। সম্প্রতি হলদিয়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার অধীনে থাকা একটি ঠিকাদার সংস্থায় অন্তত ২২ জন শ্রমিক নেওয়ার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। চলতি মাসে ২২ জন শ্রমিক ওই ঠিকাদার সংস্থায় কাজে যোগ দেন।
তবে ওই নিয়োগ নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে পদ্ধতিগত অনিয়মের অভিযোগ জমা পড়ে। কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, সরকার স্বীকৃত পদ্ধতি না মেনে অন্য পথে নিয়োগ করা হয়েছে। স্থানীয় একাংশর আরও অভিযোগ, এই নিয়োগে ঠিকাদার ও স্থানীয় শাসক নেতৃত্বের যোগসাজেসের মাধ্যমে মোটা টাকার লেনদেন হয়েছে।
নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের তরফে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা আধিকারিকেরা ওই ঠিকাদার সংস্থার ২২ জনের নিয়োগের প্যানেল বাতিলের কথা ঘোষণা করে। বৃহস্পতিবার সকালে ওই ঠিকাদার সংস্থার নতুন যোগদানকারী কর্মীদের ‘গেট পাস’ নিয়ে নেওয়া হয় শিল্প নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনীর তরফে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, “জেলা প্রশাসনের নির্দেশক্রমে ২২ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। তাদের গেট পাস ফেরত নেওয়া হয়েছে।“ এই ঘটনার পরেই বৃহস্পতিবার দুপুরে জরুরি ভিত্তিতে হলদিয়ার এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ অফিসে সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক বসেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। বৈঠকে ছিলেন হলদিয়ার মহকুমাশাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায়, ফ্যাক্টরি ইনস্পেক্টর দেবায়ন দে, হলদিয়া রিফাইনারির সিজিএম দেবাশিস দত্ত, হলদিয়া এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ অফিসার এবং হলদিয়ার ডেপুটি লেবার কমিশনার।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, কোনও সংস্থায় নিয়োগ ঠিকভাবে হচ্ছে কি না, সে জন্য বেশ কয়েকজন পর্যবেক্ষক মনোনীত করা হয়েছে। এই পর্যবেক্ষকরা নিয়োগ প্রক্রিয়ার পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশের তরফে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। আপাতত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার তরফে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরে প্যানেল বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের তরফে একটি তদন্ত প্রক্রিয়া চালু করা হবে।”