HomeHaldia Job VacancyHaldia Job Vacancy : প্রশাসনের ঢিলেমি, হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে সিন্ডিকেটের রমরমা, কিভাবে লুঠ...

Haldia Job Vacancy : প্রশাসনের ঢিলেমি, হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে সিন্ডিকেটের রমরমা, কিভাবে লুঠ হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা, কিভাবেই বা মিলতে পারে সমাধান রইল বিস্তারিত রিপোর্ট !

spot_img
spot_imgspot_img
- Advertisement -

হলদিয়া : হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের কারখানাগুলিতে কর্মী নিয়োগে স্বচ্ছ্বতা আনতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে কর্মসংবাদ পোর্টাল। বছর ভর এই পোর্টালের মাধ্যমে হাজার হাজার কর্মী নিয়োগ হচ্ছে। কিন্তু এরই আড়ালে রীতিমতো ডালপালা মেলেছে চাকরী দেওয়ার সিন্ডিকেট। একাধিক হেভিওয়েট নেতা এই (Haldia Job Vacancy) সিন্ডিকেটের মাথা হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। যে কোনও কারখানায় কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে এলেই এই সিন্ডিকেটের তৎপরতা বেড়ে যায়। এদের সঙ্গে টাকার চুক্তিতে এঁটে উঠলে তবেই মেলে কাজে নিয়োগের ছাড়পত্র।

যার সাম্প্রতিক উদাহরণ মিলেছে হলদিয়ার আইওসি রিফাইনারী ক্যান্টিন কর্মী নিয়োগ ঘিরে। এই প্রকল্পে ১৭ জনের নিয়োগে প্রায় ৮৫ লক্ষ টাকার অবৈধ লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন একাধিক কর্মপ্রার্থী। ইতিমধ্যে জেলা শাসকের নজরেও এসেছে বিষয়টি। এরপরেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু হলদিয়ায় নিয়োগ ঘিরে সিন্ডিকেটের এই দাপটের জন্য প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন কর্মপ্রার্থীদের একাংশ।  যার জেরে প্রশাসনের স্বচ্ছ্ব নিয়োগের গোটা প্রক্রিয়াই এখন প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।

কিভাবে হলদিয়ায় জাল বিছিয়েছে এই সিন্ডিকেট সে বিষয়ে একাধিক তথ্য উঠে এসেছে কর্মপ্রার্থীদের একাংশের অভিজ্ঞতায়। দীর্ঘ দিন ধরেই একমাত্র ‘NewzBangla’ পোর্টাল হলদিয়া জব ভ্যাকেন্সি সংক্রান্ত সংবাদ পরিবেশন করে চলেছে নিয়মিত ভাবে। গোটা বিশ্বের লক্ষাধিক পাঠক নিউজবাংলা পেজের মাধ্যমে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল তথা ‘Karmasangbad’ পোর্টালে চাকরীর হাল হকিকতের আপডেট তথ্য পেয়ে থাকেন এবং পছন্দের কাজে আবেদনের সুযোগ পান।

তাই হলদিয়ায় সিন্ডিকেটের হাল হকিকৎ ও তার সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে আমরা ‘নিউজবাংলা’ পোর্টালের তরফ থেকে একাধিক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার কিছু সমাধানের পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি মাত্র। সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনও দ্রুত উদ্যোগী হবেন বলেই আমরা আশাবাদী।

সমস্যা-১

নিয়োগকারী সংস্থার তথ্য প্রকাশ্যে আনার কুফল – কর্মসংবাদ পোর্টালে যে কাজের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় সেখানে নিয়োগকারী ঠিকাদার সংস্থার লেটারহেড সহ তাঁদের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। এরফলে সিন্ডিকেটের সদস্যরা দ্রুত ওই ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেদের মনোনীত কর্মীদের নিয়োগের সুপারিশের তালিকা পাঠিয়ে চাপ দেওয়ার সুযোগ পেয়ে যায়।

সমস্যা -২

অনেক ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের সদস্যরা চাহিদা মতো লোক খুঁজে না পেলে বিভিন্ন টেকনিক্যাল কাজে নিয়োগের জন্য যারা আবেদন করেছেন তাদের মধ্যে থেকে যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীদের নামের তালিকা ঠিকাদার সংস্থার কাছে চেয়ে নেয়। এরপর সেই প্রার্থীদের টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেছেন একাধিক কর্মপ্রার্থী। অনেক ক্ষেত্রে আবার চাপের মুখে পড়ে ঠিকাদাররাই চাকরী প্রার্থীদের সিন্ডিকেটের নেতাদের কাছে সুপারিশের জন্য পাঠিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।

সমস্যা – ৩

ইন্টারভিউয়ের স্থান নির্ণয় – অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কর্মসংবাদের মাধ্যমে আবেদন জমা নেওয়ার পর নির্দিষ্ট ঠিকাদার সংস্থা তাঁদের নিজস্ব অফিসে প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ের বন্দোবস্ত করেন। এরফলে নিয়োগে স্বচ্ছ্বতা অনেকাংশেই ধাক্কা খায়। সেখানেও সিন্ডিকেটের লোকেরা সরাসরি ঢুকে পড়ে মাথা গলিয়ে দেওয়ার সুযোগ পান।

সমস্যা- ৪

পুলিশ ভেরিফিকেশান সংক্রান্ত – এই মুহূর্তে কর্মসংবাদ পোর্টালের মাধ্যমে যে কোনও শিল্প কারখানায় নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশের দেওয়া সংশাপত্র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হিসেবে বিবেচিত হয়। কোনও ব্যক্তির আগের কোনও ক্রিমিনাল রেকর্ড থাকলে বা কোনও বিচারাধীন মামলায় নাম থাকলে তার কাজ পাওয়ার কোনও সুযোগ থাকে না। বহু ক্ষেত্রে ক্লিনচিট দেওয়ার সময় কর্মপ্রার্থীদের মারাত্মক পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হয়। এক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ সেটেলমেন্টের ভূমিকা নিচ্ছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। বহু ক্ষেত্রেই টাকার বিনিময়ে এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা পুলিশ ও কর্মপ্রার্থীর মধ্যে যোগসূত্র গড়ার কাজ করেন।

সমস্যা – ৫

শ্রমিক ইউনিয়ানের দাদাগিরি – শ্রমিক স্বার্থ দেখার জন্যই মূলতঃ কারখানার গেটগুলিতে শ্রমিক ইউনিয়ানগুড়ি গড়ে উঠেছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ইউনিয়ানের কর্তাব্যক্তিদের একাংশ আসলে কর্মপ্রার্থীদের গতিবিধির ওপর নজরদারী চালাতেই ব্যস্ত থাকেন। নতুন কোনও কাজের সংবাদ প্রকাশ পেলেই অতিসক্রিয় হয়ে ওঠেন কিছু নেতা। তাঁদের অঙ্গুলিহেলনে অবলীলায় সিন্ডিকেটের সদস্যরা ঠিকাদার সংস্থা ও কর্মপ্রার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কাজের জন্য নিয়োগপত্র পাওয়ার পরেও সিন্ডিকেটের দাবী মতো টাকা না দিলে গেটে ঢুকতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয়ে বলে অভিযোগ করেছেন একাংশ কর্মপ্রার্থী।

উপরিক্ত সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ –

  • নিয়োগের অফিশিয়াল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ক্ষেত্রে নিয়োগকারী সংস্থার লেটারহেডের মাধ্যমে নোটিশ জারি না করে প্রশাসন নির্ধারিত ফরম্যাটের মাধ্যমে নোটিশ জারি করা হলে ঠিকাদার সংস্থার তথ্য সহজে গোপন রাখা সম্ভব হবে।
  • এই নোটিশের ফরম্যাটে নিয়োগকারী ঠিকাদার সংস্থার সম্পর্কে কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আনা যাবে না। কেবলমাত্র কারখানার নাম, কাজের নাম, শূন্যপদ সহ অন্যান্য তথ্য স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ থাকতে পারে।
  • এই নোটিশে উল্লেখিত Job Notification No. আবেদনপত্রের খামের ওপর স্পষ্ট ভাবে লিখে দিতে হবে। এর মাধ্যমেই কোন কাজে নিয়োগ হচ্ছে তা বাছাই করা হবে।
  • কর্মসংবাদ পোর্টালের মাধ্যমে নিয়োগের ক্ষেত্রে এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জের পরিকাঠামোকে পুরো দস্তুর ব্যবহার করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে লেবার কমিশনের অফিসের পরিকাঠামোকেও কাজে লাগানো সম্ভব। সেক্ষেত্রে ঠিকাদার সংস্থাগুলিতে সরাসরি আবেদন জমা নেওয়া বন্ধ করা দরকার। কেবলমাত্র অনলাইনে বা এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ বা লেবার কমিশনের দফতরের ড্রপ বক্সেই আবেদন জমা নেওয়া যায়।
  • ইন্টারভিউয়ের জন্য এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ বা লেবার কমিশনের অফিসক এবং প্রয়োজনে নির্ধারিত শিল্প কারখানার অফিসকেই প্রাধান্য দেওয়া যেতে পারে।
  • শিল্পাঞ্চলে কর্মী নিয়োগের ইন্টারভিউ বোর্ডে মনিটারিংয়ের জন্য একটি স্থায়ী প্রশাসনিক নজরদারী কমিটি গঠন করা যেতে পারে। এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ, লেবার কমিশন, মহকুমা প্রশাসন ও পুলিশের একজন দক্ষ প্রতিনিধিকে নিয়ে এই কমিটি গঠন করা যেতে পারে। প্রশাসনিক এই কমিটির উপস্থিতিতে ইন্টারভিউ করে প্রার্থী নিয়োগ সম্পন্ন হলে অবৈধ ভাবে টাকা লেনদেনকারী সিন্ডিকেটের দাপাদাপি বন্ধ করা অনেকাংশেই সম্ভব হবে।
  • সিন্ডিকেট সহ অবৈধ লেনদেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও সেই ঘটনার দ্রুত তদন্তের স্বার্থে একটি উচ্চ পর্যায়ের গ্রিভান্স সেল তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি।
  • এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ, লেবার কমিশন, মহকুমা শাসকের দফতর বা জেলা শাসকের অফিসে কারখানার শ্রমিক বা কর্মপ্রার্থীদের অভিযোগ জানানোর জন্য কমপ্লেন বক্স বসানো অত্যন্ত জরুরি। সময়ে অভিযোগ জানাতে না পারায় অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা বড় আকার ধারণ করে। এবং তা সমাধান করতে গিয়ে প্রশাসনকেও অনেকাংশে নাজেহাল হতে হয়।
  • শিল্পাঞ্চলে কাজে আবেদনের জন্য অনলাইনে পুলিশ ভেরিফিকেশানের জন্য আবেদন ও সার্টিফিকেট ডাউনলোডের ব্যবস্থা থাকা অত্যন্ত জরুরী। এরুফলে একদিকে অযথা হয়রানি যেমন কমবে তেমনই সিন্ডিকেটের মাঘা গলানোর সুযোগও কমে যাবে। তাছাড়া খুব কম সময়ের মধ্যে একজন কর্মপ্রার্থী পুলিশ ভেরিফিকেশান সার্টিফিকেট জমা করে কাজে যোগ দিতে পারবেন বলেই বিশেষজ্ঞদের মত।

Statutory Warning – নিউজবাংলা.কম একটি সংবাদ সংস্থা। আমরা কেবলমাত্র চাকরী সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ করি। এই সংস্থা কোনওভাবেই কোনও চাকরীপ্রার্থীকে কাজের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে না। অর্থের বিনিময়ে কোনও প্রকারে ইন্টারভিউতে বসিয়ে দেওয়া বা চাকরী পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় না। কোনও ধরণের রেজিষ্ট্রেশান ফি, ফেরৎযোগ্য টাকাও দাবী করে না। কোনও ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান যদি চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ দাবী করে তাহলে নির্দিষ্ট প্রশাসনিক বিভাগের কাছে অভিযোগ জানান। এমন কোনও প্রতারণার ফাঁদে পা দেবেন না।

- Advertisement -

নিয়মিত খবরে থাকতে আমাদের সোশ্যাল সাইটে যুক্ত হয়ে যান

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments