NewzBangla Desk : একদিকে ড্রেজিংয়ের অভাব, অন্যদিকে নজরদারীর চূড়ান্ত অভাব। এই দুইয়ের ফসল বাংলার এবারের বন্যা পরিস্থিতি। ডিভিসি সহ একাধিক ব্যারেজ থেকে ছাড়া জলে ইতিমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা। বন্যার খবর উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী বুধবার দুপুর (Man Made Flood) নাগাদ ছুটে যান হুগলির পুরশুড়া ব্লকে। সেখানে জলমগ্ন পরিস্থিতি দেখে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। এদিন পুরশুড়ার একটি সেতুতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, “পরিকল্পিত ভাবে বাংলাকে ডুবিয়েছে। এটা ম্যান মেড বন্যা”।
মুখ্যমন্ত্রীর অনুযোগ, “যখন ৭০-৮০ শতাংশ জল ভরে যায়, তখন কেন জল ছাড়ে না ডিভিসি, কেন্দ্র ‘ড্রেনেজ করে না। নিজেদের রাজ্যগুলোকে বাঁচাচ্ছে। আর সবটা বাংলার উপরে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাংলা আর কত বঞ্চনা সহ্য করবে” প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ‘‘সাড়ে তিন লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে ডিভিসি থেকে। আমি নিজে ডিভিসি-র সঙ্গে কথা বলেছি। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। এত জল এর আগে ছাড়া হয়নি”।
দামোদরের জলে প্লাবিত হুগলির বেশ কিছু এলাকা। পুরশুড়ার বেশ কিছু জায়গায় জলবন্দি হয়ে পড়েছেন মানুষজন। বেশ কিছু বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। গ্রামবাসীদের সঙ্গে দেখা করে কথাবার্তা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। হুগলির তারকেশ্বরের একাধিক গ্রাম জলের তলায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক হাজার মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। জলের তলায় হাজার হাজার বিঘা চাষের জমি। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির জেরে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল দামোদর। তার উপর দফায় দফায় জল ছেড়েছে ডিভিসি।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। কিন্তু আবারও ডিভিসি-র ছাড়া জলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যার জেরে বন্যাকবলিত তারকেশ্বর ব্লকের কেশবচক, সন্তোষপুর, তালপুর, চাপাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের হাজার হাজার মানুষ। ইতিমধ্যে জলের তলায় চলে গিয়েছে বহু বসতবাড়ি। দুর্গতদের উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরে আনার ব্যবস্থা করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বার বার প্রশাসন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করলেও সহযোগিতা করেনি।
ডিভিসি-র ছাড়া জলে বুধবার থেকে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা-২ ব্লক বন্যার কবলে পড়েছে। দু’টি ব্লকেরই বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত তলিয়ে গিয়েছে দামোদরের জলে। সরকারি সূত্রে খবর, সেখানেও যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবারই তিনি চলে যাবেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। মেদিনীপুর শহরে রাতে থাকবেন। বৃহস্পতিবার ঘাটালের প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে যেতে পারেন মমতা। তবে বুধবার ভোরে আচমকা প্লাবিত পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া পুরসভা এলাকায় তিনি যাবেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।