পাঁশকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর : খবর মিলেছিল বিপদ সীমার ওপর দিয়ে বইছে কংসাবতীর জল। এরপরেই তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতি করতে হবে নদীবাঁধ। সেই মতোই মঙ্গলবার বেলার দিক থেকে রাতভর কংসাবতী নদী বাঁধের বিভিন্ন এলাকা চষে বেড়িয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা।
রাতভর অক্লান্ত (Panskura Flood) পরিশ্রম করে বহু জায়গার দুর্বল বাঁধ বালির বস্তা দিয়ে আটকে দিয়েছেন সেচ দফতরের কর্মীরা। হাত লাগিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারাও। তবুও ঠেকানো গেল না বন্যা। বুধবার ভোরে পাঁশকুড়া পুরসভার ১৮নং ওয়ার্ড এলাকায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল নদীর বাঁধ। হুহু করে প্লাবিত হল বিস্তীর্ণ এলাকা।
কিভাবে এমন পরিস্থিতি। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসক পূর্ণেন্দু মাজী জানালেন, “আমরা সারারাত কাজ করেছি। সেচ দফতর, পুলিশ, প্রশাসন, পুরসভা সহ স্থানীয় পঞ্চায়েতগুলি একযোগে নদীবাঁধ রক্ষায় ঝাঁপিয়েছিলাম। বহু জায়গাতেই বাঁধের ফাটল মেরামতি করা হয়েছে দ্রুততার সঙ্গে। সারারাত বাঁধগুলিতে নজরদারী চালানো হয়েছে। তবে তারপরও একটি জায়গায় হাতের বাইরে চলে গিয়েছে পরিস্থিতি” জানিয়েছেন জেলা শাসক।
জেলা শাসক জানান, “প্রশাসন সারা রাত কাজ করেছে। এরপর ভোর ৪টে ৫এ ওই জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে”। তিনি জানান, “আমরা যখনই বুঝতে পেরেছি আর কোনও উপায় নেই তখন আমরা দ্রুত মাইক প্রচার করে এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করার চেষ্টা চালিয়েছি”। জেলা শাসক জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে পাঁশকুড়া পুরসভার সমস্ত এলাকা বন্যার জলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে ৩টি পঞ্চায়েত এলাকাও কংসাবতীর জলে ডুবে গিয়েছে”।
তিনি বলেন, “এখন আমরা দ্রুত জলবন্দী মানুষদের সুরক্ষিত এলাকায় তুলে আনছি। সেই সঙ্গে দুর্গত এলাকার মানুষদের জন্য প্রয়োজনীয় খাওয়ার, জলের ব্যবস্থা করছি। প্রায় ৩ হাজার মানুষকে উঁচু জায়গায় সরিয়ে আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে কিভাবে নদীবাঁধের ভাঙা অংশে দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু করা যায় সেই প্রস্তুতিও জোর কদমে চলছে”। জেলা শাসক জানিয়েছেন, দুর্গতদের উদ্ধারে এনডিআরএফের ২টি টিম নামানো হয়েছে। দিঘা থেকেও উদ্ধারকারী দলকে আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলা পুলিশের টিমও দুর্গতদের উদ্ধারে যথাসম্ভব কাজ করছে।
বাস রাস্তার ওপর দিয়ে বইছে জল, পাঁশকুড়ার ভয়াবহ জল যন্ত্রণার কিছু মুহূর্তের ভিডিও আপনাদের জন্য –