পটাশপুর, পূর্ব মেদিনীপুর : বুধবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানা এলাকায় চায়ের দোকানে বচসার জেরে এক তৃণমূল কর্মীকে খুব কাছ থেকে গুলি চালিয়ে দিল স্থানীয় এক যুবক। আহত তৃণমূল নেতার নাম তপন প্রধান। তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় কলকাতায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অন্যদিকে এই ঘটনার পরেই স্তানীয়রা অভিযুক্ত সঞ্জীব নায়েককে পাকড়াও করে বেধড়ক মারধর করে। পরে ঘটনার খবর পেয়ে পটাশপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত সঞ্জীবকে উদ্ধার করে পটাশপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতের দিকে পটাশপুর ২ ব্লকের বড় উদয়পুরের মনসাতলা বাজার এলাকায় চায়ের দোকানে বসে ছিলেন তপন প্রধান। সেই সময় ওই দোকানে আসেন প্রতিবেশী সঞ্জীব। প্রথমে দুজনের মধ্যে বিভিন্ন আর্থিক বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। এরপরেই আলোচনা মোড় নেয় রাজনৈতিক দিকে। অভিযোগ, সঞ্জীব তর্কাতর্কি করতে করতে তৃণমূলকে গালাগাল দিতে থাকে। প্রতিবাদ করলে আচমকাই সঞ্জীব ছুটে গিয়ে পাশেই রাখা গাড়ি থেকে পিস্তল বের করে এনে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালিয়ে দেয়। গুলি গিয়ে লাগে তপনের কোমরের কাছে।
এর জেরে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে তপন। সে সময় অভিযুক্ত সঞ্জীব ছুটে পালাগে গেলে স্থানীয়রা তাঁকে পাকড়াও করে গণধোলাই দেয়। পরে পুলিশকে খবর দিলে অভিযুক্তকে পাকড়াও করে পুলিশ। পটাশপুরের তৃণমূল বিধায়ক উত্তম বারিকের অভিযোগ, “অভিযুক্ত যুবক বিজেপির সমর্থক। এলাকায় সন্ত্রাস চালাতেই অভিযুক্ত সঞ্জীব গুলি চালিয়েছে তৃণমূল কর্মী তপন প্রধানকে লক্ষ করে। এই ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবী জানাচ্ছি”।
যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবী, অভিযুক্ত সঞ্জীব কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। তিনি কোনওভাবেই বিজেপির সঙ্গে যুক্ত নয়। চায়ের দোকানে বচসার জেরে ঝামেলা থেকে গুলি চলেছে যাকে অযথা রাজনীতির রঙ চড়ানোর চেষ্টা চলছে। সেই সঙ্গে বিজেপির অভিযোগ, পুলিশের নিষ্ক্রীয়তার জেরে পটাশপুর গুলি বন্দুকের আখড়া হয়ে উঠেছে৷ এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর পটাশপুরের বিশ্বনাথপুরে বিশ্বনাথপুর গার্লস হাই স্কুলের সামনে কেলেঘাই নদের পাড়ে গুলি করে মেরে ফেলা হয় বাপি নায়েক (৩২) নামের এক যুবককে। ডাকাতির টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ঝামেলার জেরে বাপিকে খুন করা হয়। পরে তদন্তে নেমে ওই গ্রামেরই ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।