NewzBangla, Purba Medinipur : এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল ও নন্দকুমার থানার বাসিন্দারা। সকালে নিজের বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার প্রেমিকের দেহ। আর সেই খবর পাওয়ার পরেই বিকেলে নিজের বাড়িতে একই কায়দায় নিজেকে শেষ করে দিলেন প্রেমিকা। এই ঘটনায় বাকরুদ্ধ দুই পরিবার।
মৃত যুবক বিশ্বজিৎ দাস (২১) মহিষাদল থানার বামনপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং মৃত কিশোরী একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী গায়ত্রী বর্মন (১৮) নন্দকুমার থানার চুনাখালি এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে মৃতদেহগুলি ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, বিশ্বজিতের সঙ্গে বছর কয়েক আগে সামাজিক মাধ্যমে পরিচয় হয় গায়ত্রীর। দুই পরিবারে ঘটনা জানাজানি হলে তাঁরা বিষয়টি মেনে নেয় বলে খবর। বর্তমানে বিশ্বজিৎ ভিন রাজ্যে ফুলের কারিগর হিসেবে কাজ করত। সূত্রের খবর, মেয়ের বয়স সম্প্রতি ১৮ বছর হওয়ার পর এবছরের অগ্রহায়ন মাসে তাঁদের বিয়ের ব্যাপারেও প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল বলে মেয়ের পরিবার সূূত্রে দাবী। এরজন্য মেয়ের গহনাগাটিও কেনা হয়ে গিয়েছিল বলে খবর।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার বেলার দিকে তাঁরা দুজনে দেখা করে। এরপরেই বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়িতে ফিরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে বিশ্বজিৎ আত্মঘাতী হয়। আর এই ঘটনা জানার পর ওই দিনই বিকেল ৩টে নাগাদ নিজের বাড়িতে একই কায়দায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় গায়ত্রীও। কিন্তু ঠিক কোন কারনে দুই যুগল আত্মঘাতী হয়েছে সে বিষয়ে পরিবারের কেউই কিছু জানাতে পারেনি।
একদিকে ছেলের বাড়ির সন্দেহ মেয়ের পরিবার আগে বিয়েতে রাজি থাকলেও এখন তারা হয়তো এই সম্পর্ক মানতে রাজি হচ্ছিল না। সেই কারনে মেয়েটি হয়তো সম্পর্ক ছেড়ে বেরিয়ে যেতে চাইছিল। তার জন্যই নিজেকে শেষ করে দিয়েছে বিশ্বজিৎ। মৃত যুবকের প্রতিবেশী প্রসেনজিৎ সামন্ত জানান, “এই ঘটনায় আমরা শোকাহত। ওরা দু’জন দেখা করেছিল বলে কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছে। তবে কেন দু’জনেই আত্মঘাতী হল তা আমাদের অজানা”।
যদিও মেয়ের পরিবারের তরফে দাবী, তাঁরা মেয়ের ইচ্ছে মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু কেন এমনটা ঘটল তা কারও জানা নেই। মৃত গায়ত্রীর পরিবারের ঘনিষ্ঠ ভবেশ বর্মণ জানান, “পরিবারের বড় মেয়ে। তাঁকে নিজের মত চলাফেরায় ছাড় দিয়েছিল পরিবার। তাঁর বিয়ের প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু আচমকা এমন পদক্ষেপ কেন নিল সেই বিষয়ে আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না”। আজ বৃহস্পতিবার দুই মৃতদেহ ময়না তদন্তের পর তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে তাঁদের দেহ সৎকারের কাজও শেষ হয়েছে। তবে এই ঘটনায় কোনও পরিবারের তরফে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়নি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।