কাঁথি : কলেজে ছাত্র ভর্তিতে দুর্নীতি ঠেকাতে তৎপর হয়েছে রাজ্য সরকার। এবার সমস্ত কলেজে কেবলমাত্র অনলাইন পোর্টালেই ছাত্রভর্তি হচ্ছে বলে খবর। কিন্তু সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি প্রভাতকুমার কলেজে ছাত্রভর্তি নিয়ে দুই ছাত্রনেতার অডিও কথোপকথন (অডিও’র সত্যতা যাচাই করেনি নিউজবাংলা) সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে শিক্ষার অঙ্গনে।
এত কাঠখড় পুড়িয়ে অনলাইনে ছাত্রভর্তির মধ্যেও রয়ে গিয়েছে বিস্তর ফাঁকফোকর, যাকে কাজে লাগিয়ে অবলীলায় চলছে বিপুল টাকার র্যাকেট? রাজ্যের বিরোধীরা কজেলে কলেজে ছাত্রভর্তির নামে বিপুল টাকার কারবার নিয়ে যে প্রশ্ন তুলে আসছে তা এই অডিও ক্লিপ থেকেই কিছুটা ধারণা করা সম্ভব।
কিন্তু কিভাবে চলে এই র্যাকেট? দুই ছাত্রনেতার অডিও কথোপকথনেই স্পষ্ট, তাঁরা আসলে অনলাইন পোর্টালকে হাতিয়ার করেই ব্যবসা চালানোর সুযোগ নিচ্ছে। কোনও ছাত্র তাঁর পছন্দের বিষয় পাওয়ার ক্ষেত্রে যদি দৌড়ঝাঁপ শুরু করে তখনই ঝোপ বুঝে কোপ মারছে একদল স্বঘোষিত ছাত্রনেতা।
সময় মতো অনলাইনে ফর্ম পূরণ করতে না পারা, কোন কলেজে কতগুলি আসন ফাঁকা পড়ে রয়েছে তা সঠিকভাবে বুঝতে না পারা, কবে কবে ভর্তি পোর্টাল খুলছে বা বন্ধ হচ্ছে তা সঠিক ভাবে না জানা’র মতো অজস্র কারণকে কাজে লাগাচ্ছে ছাত্রভর্তি’র ওই র্যাকেট। এমনই এক র্যাকেটে’র মধ্যেকার কথোপকথন উঠে এসেছে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে।
কি রয়েছে ওই অডিও ক্লিপটিতে শুনুন –
কাঁথি’র এক যুবক এই কথোপকথনের অডিওটি ফাঁস করে দাবী করেছে এই কথাবার্তা হয়েছে কাঁথি কলেজের এক তৃণমূল ছাত্রনেতার সঙ্গে জেলা স্তরের তৃণমূল ছাত্রনেতার মধ্যে। অয়ন বিশ্বাস নামের ওই ব্যক্তি নিজের ফেসবুক পেজে অডিও ক্লিপটি শেয়ার করে দেখিয়েছেন কিভাবে ছাত্রভর্তির র্যাকেট সচল রয়েছে।
কাঁথির অপর একজন ছাত্রনেতার আরও একটি অডিও বার্তায় শোনা যাচ্ছে “একজন যুবক বলছেন আমি একটা খবর পেলাম তারা নাকি সাড়ে ৮ লাখ টাকা হিসাব পেয়েছে, কোন ছাত্রকে ভর্তি করেছি। পাল্টা উত্তরে উল্টোদিকের ছাত্রনেতাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “আমরা ভর্তি করেছি ৮ লাখ টাকা হোক। কেউ জানতে তাতে কিছুই এসে যায় না”।
কাঁথির অডিও কান্ডের ফেসবুক পোষ্ট-
এনিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপি নেতা অসীম মিশ্র বলেন, “কলেজের ভিতরে বিভিন্ন অবৈধ কাজকর্ম হচ্ছে। ছাত্রছাএীদের কাছ থেকে ভর্তির নামে তোলাবাজি করা হচ্ছে। তার প্রমাণ হচ্ছে অডিও ক্লিপ ফাঁস। আদিবাসী হিসেবে আমরা লজ্জিত”। যদিও এই অডিও ক্লিপের সত্যতা রয়েছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূলের নেতৃত্বরা।
এরই পাশাপাশি কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজের ছাত্র পরিষদ ইউনিট সভাপতি শেখ ইমরান বলেন “ছাত্র পরিষদ কোন ছাত্রকে ভর্তি করায় নি। মেরিট লিস্ট অনুযায়ী ভর্তি হয়েছে। ছাত্রপরিষদকে কালিমালিপ্ত করার জন্য অডিও ক্লিপটি ভাইরাল করা হয়েছে”।