নিউজবাংলা ডেস্ক : উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবেই ধর্ষণ ও খুনের মামলায় ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত তিনজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত, বিচারপতি রবীন্দ্র ভাট এবং বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর বেঞ্চ এমনটাই জানিয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের সাজা থেকে একেবারে বেকসুর খালাস হল কীভাবে আসামিরা? সুপ্রিম কোর্টের সোমবারের নির্দেশে অনেকেই হতবাক হয়েছিলেন।
মঙ্গলবার প্রকাশ্যে এসেছে সেই কারণ। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এক্ষেত্রে অকাট্য তথ্যপ্রমাণের অভাবেই তিন ফাঁসির আসামিকে ‘বেনিফিট অব ডাউট’ দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গতঃ ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১৯ বছরের এক তরুণীকে (ওই নির্যাতিতাকে ‘অনামিকা’ বলে অভিহিত করা হয়) ধর্ষণ, শারীরিক নির্যাতন খুন করা হয়।
আরও দেখুন : সুপ্রিম নির্দেশে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত তিন ফাঁসির আসামি বেকসুর খালাস !
এই মামলায় ২০১৪ সালে তিন দোষীর মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রায়াল কোর্ট। দিল্লি হাইকোর্টও সেই রায় বহাল রাখে। এরপর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় ওই তিন দোষী। তারা সাজা কমানোর আর্জি জানায়। দিল্লি পুলিসের তরফে সেই আবেদনের বিরোধিতা করা হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ৪৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনকে ‘ক্রস এগজামিন’ করা হয়নি। আদালতের উচিত আইনের চুলচেরা বিচার বিশ্লেষণ করা। পারিপার্শ্বিক মানবিক পরিস্থিতির চাপ বা অন্য কিছুর প্রভাবে কোনও অভিযোগের বিচার করা উচিত নয়।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্পষ্টতই হতাশ ওই কিশোরীর পরিবার। মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও তাঁরা জানিয়েছেন, ‘আমাদের দীর্ঘ আইনি লড়াই চলছে এবং তা চলবেও।’ ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে অপহরণের কয়েকদিন পর হরিয়ানার রেওয়ারির একটি খেত থেকে ওই কিশোরীর দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। তার দেহে একাধিক আঘাতের প্রমাণ মেলে৷ যা থেকে অনুমান, গাড়ির যন্ত্রাংশ ও মাটির পাত্র দিয়ে তাঁকে আঘাত করা হয়েছে।
তদন্তে দেখা যায়, ওই কিশোরীর চোখে অ্যাসিড ঢেলে দিয়েছিল অভিযুক্তরা। গোপনাঙ্গে ঢেলে দেওয়া হয়েছিল মদ। লাল রঙের ইন্ডিকা গাড়ির সূত্রে ধরে প্রথমে রাহুল নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। পরে বাকি দুই অভিযুক্ত রবি কুমার ও বিনোদও ধরা পড়ে। জেরায় প্রত্যেকেই অপরাধ স্বীকার করেছিল। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টে সাজা কমানোর আবেদন জানিয়ে কী করে তারা বেকসুর খালাস পেল, তা বুঝে উঠতে পারছেন না নির্যাতিতার বাবা-মা।