নিউজবাংলা : রাত পোহালেই প্রাথমিকের টেট (WB TET)। আগামী কাল রবিবার বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২.৩০টে পর্যন্ত চলবে পরীক্ষা। তার জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে রাখছে প্রশাসন। পরিবহণ, আইনশৃঙ্খলা প্রস্তুতি বাড়তি বাস, ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রায় ৭ লক্ষ পরীক্ষার্থী যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে এবং বাড়ি ফিরতে পারেন, সেই ব্যবস্থায় কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না সরকার।
তবে অধিকাংশেরই বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে পরীক্ষা কেন্দ্র হওয়ায় যাতায়াতে মারাত্মক সমস্যা তৈরি হতে পারে। সেক্ষেত্রে বহু পরীক্ষার্থী আবার প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে পারেন। এরফলে রাস্তায় ব্যাপক যানজট তৈরি হওয়ার আশংকা রয়েছে। গতবারের পরীক্ষার সময় অনেক পরীক্ষার্থীই শুধু রাস্তায় যানজটের কারনে সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌছাতে পারেননি।
পরীক্ষার্থীদের একাংশ জানিয়েছে, তাঁরা আজ থেকেই পরীক্ষাকেন্দ্রের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন। রাতেই অনেকে পরীক্ষা কেন্দ্রের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে চাইছেন। অনেকেই আবার আজ থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রের কাছাকাছি ঘর নিয়েছেন, রাতটুকু কাটিয়ে সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের পৌঁছানোর জন্য। অনেকেই আবার রাতেই বেরিয়ে পড়বেন, কেউ খুব সকালে বেরিয়ে পড়তে চাইছেন। তবে বেলা করে যারা রাস্তায় বেরোবেন তাঁদের জন্য কিছুটা হলেও সতর্কবানী জানাচ্ছেন অভিজ্ঞরা।
ইতিমধ্যে প্রতিটি এলাকায় মাইক প্রচার করে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, রবিবার বেলা ৮টার পর থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রের আশেপাশে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সেই সঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রের আশেপাশে ১৪৪ ধারা জারি করা হচ্ছে বলেও প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
ইতিমধ্যেই বেশ কিছু রুটে অতিরিক্ত ট্রেন চালানো হবে বলেও রেল সূত্রে খবর। দক্ষিণ পূর্ব রেল জানিয়েছে, রবিবার হলেও টেট পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে কাজের দিনের মতোই ট্রেন পরিষেবা চলবে। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী শুক্রবার জানিয়েছেন, টেট-এর জন্য বাড়তি দু’হাজার সরকারি বাস চালানো হবে।
পুলিস ডিরেক্টরেটের কাছে জেলাগুলি গড়ে বাড়তি চার থেকে ছ’টি গাড়ি ভাড়া নেওয়ার অনুমতি চেয়েছে। টহলদারি বাড়ানোর জন্যই এই অনুরোধ। এদিকে, প্রতিটি কেন্দ্রে ২০০০ টাকা বরাদ্দ থাকবে অফিসারইন-চার্জের গাড়ির জন্য। অন্যান্য আধিকারিকদের সাম্মানিক খাতে কেন্দ্ৰপিছু মোট ১৪,৭৫০ টাকা বরাদ্দ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
এছাড়াও বেসরকারি সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক করে বাসের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাগুলিতে যেখানে বড় বাস ঢুকতে পারবে না, সেখানে ছোট বাস বা গাড়ির ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দিয়েছে দপ্তর। এসবিএসটিসি বেলঘরিয়া এবং দুর্গাপুরে কন্ট্রোল রুম খোলা রাখছে। ডব্লুবিটিসি কলকাতার সদর দপ্তরে খোলা রাখছে কন্ট্রোল রুম৷ মেট্রো নামাচ্ছে বাড়তি আটটি রেক।
আরও পড়ুন : দুর্দান্ত প্যাকেজ, হলদিয়ায় প্রথমসারির ইংরেজী মাধ্যম স্কুলে মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ নিয়োগ !
অ্যাডমিট কার্ডে পরীক্ষাকেন্দ্র ভুল এসেছিল বহু প্রার্থীর। এদিন তা সংশোধন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কেন্দ্রে ঢোকার সময় নিয়ে অবশ্য একটি বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এমনিতে, একাধিকবার পর্যদ বলেছে সকাল ১১টার মধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে যেতে হবে প্রার্থীদের।
তবে, একটি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর পরে আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর দাবি, এর ফলে প্রার্থীদের একাংশ দ্বিধায় রয়েছেন। কারণ পরীক্ষা শুরু হবে বেলা ১২টায়। তার পরে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না, এটা বলার অর্থ হল ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রে প্রবেশ করা যাবে। সেটা ভেবে কেউ চলে গেলে বিপাকে পড়তে হতে পারে প্রার্থীদের।
পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার আগে অবশ্যই জেনে রাখুন কোন কোন বিষয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকছে। অন্যথায় পরীক্ষার হলে ঢুকতে বাধা পেতে পারেন আপনি।
- মোবাইল ও যে কোনও ডিজিটাল গেজেট
- সোনার গহনা
- হেলথ ব্যান্ড
- ঘড়ি
- রঙিন চশমা
- হ্যান্ড ব্যাগ
- পেন ড্রাইভ
- ইলেকট্রনিক পেন
- মানিব্যাগ
এই সমস্ত জিনিস নিয়ে কেউ যাতে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে না পারে তারজন্য প্রতিটি প্রার্থীকে কড়া পুলিশি চেকআপের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। কেউ যদি এই সমস্ত জিনিস লুকিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পর ধরা পড়েন তাহলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।