নিউজবাংলা ডেস্ক : এক হাতে মহিলার কাটা মাথা আর অন্য হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল এক যুবক। শনিবার সাতসকালে এমন হাড়হিম করা ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার বাসন্তি থানা এলাকায়। পরে (Basanti) পুলিশ এসে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত যুবক বিমল মণ্ডল তাঁর বৌদির মাথা ধড় থেকে আলাদা করে নিয়ে ঘুরছিল।
তবে আজকের এই নৃশংস ঘটনা এক লহমায় মনে করিয়ে দিচ্ছে গত বছরের ফেব্রুয়ারীতে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানা এলাকায় ঘটে যাওয়া এমনই এক নৃশংস ঘটনা। যেখানে ঠিক একই কায়দায় নিজের স্ত্রীর কাটা মুন্ডু হাতে নিয়ে রাস্তায় আস্ফালন দেখিয়েছিল গৌতম গুচ্ছাইত নামের এক যুবক। পরে পুলিশের তৎপরতায় সেই ঘাতকও গ্রেফতার হয়।
সূত্রের খবর, শনিবার সকালে বাসন্তির রাস্তার মানুষের নজরে পড়ে হাতে মহিলার কাটা মুন্ডু নিয়ে ঘুরে বেড়ানো বিমলের দিকে। তাঁর অন্য হাতে ধারালো অস্ত্র, গায়ে রক্তমাখা পোশাক দেখে সাধারণ মানুষ কাছে যেতে সাহস দেখাননি। এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখেই আতঙ্কে বাড়ির দরজা-জানলা বন্ধ করে দেন অনেকে। পরে খবর পেয়ে বাসন্তি থানার পুলিশ এসে অভিযুক্তকে পাকড়াও করে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পারিবারিক বিবাদের জেরেই এই নৃশংস খুন। যদিও এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত বিমলের মানসিক অবস্থা নিয়েও ধন্দে পুলিশ। এই ঘটনার পর স্থানীয় এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। গোটা এলাকা পুলিশের ঘেরাটোপে।
একই ভাবে ২০২৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী প্রেম দিবসের দিনে বেলার দিকে এমনই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল পটাশপুরের চিস্তিপুর গ্রামে। সেখানকার বাসিন্দা গৌতম গুছাইত স্ত্রী ফুলরানি গুছাইতকে খুন করে কাটারি দিয়ে। তার পর সেই কাটা মুন্ডু রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। বেশ কিছু ক্ষণ মুন্ডু হাতে নিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করার পর একটি বেঞ্চে গিয়ে বসে সে। পাশে রেখে দেয় স্ত্রীর কাটা মুন্ডু। সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি এবং বারমুডা পরিহিত মারমুখী গৌতমকে দেখে শোরগোল শুরু হয়ে যায় ওই এলাকায়। পেশায় হকার গৌতম। তাঁদের এক সন্তান রয়েছে। সে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। স্থানীয়দের দাবি, বেশ কিছু দিন ধরেই পারিবারিক অশান্তি চলছিল গৌতমের পরিবারে। তার জেরেই বুধবার স্ত্রীকে তিনি খুন করেছেন বলেই মনে করছেন তাঁরা।
বেশ কিছু ক্ষণ এদিক ওদিক কাটা মুন্ডু হাতে হাঁটার পর নিজেই দড়ি দিয়ে একটি জায়গা ঘিরে নিয়ে সেখানে একটি বেঞ্চ পেতে বসে পড়েন। পাশে রাখেন ওই কাটা মুন্ডু। হাতে রাখা ছিল কাটারি। স্থানীয় কয়েক জন চেষ্টা করেও ওই যুবকের কাছে ঘেঁষতে পারেননি ভয়ে। ওই ভাবে হাতে রক্তমাখা অস্ত্র হাতে নিয়ে ঠায় বসে থাকেন গৌতম। কিছু ক্ষণের মধ্যেই খবর যায় পটাশপুর থানায়। এর পর পুলিশ এসে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।