NewzBangla Desk : এবার গ্রীষ্মকালে পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের বড় অংশ জুড়ে স্বাভাবিকের থেকে বেশি সংখ্যক তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। সোমবার জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর। এপ্রিল থেকে থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দেশে আবহাওয়ার হাল কেমন থাকতে পারে তার বিস্তারিত পূর্বাভাস জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর।
রবিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। কিন্তু বাতাসে জলীয় বাষ্পের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ভ্যাপসা গরমের অস্বস্তি চলছে। কাল বুধবার (Weather Update) পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় কোথাও কোথাও বজ্রগর্ভ মেঘ থেকে ঝড়বৃষ্টি হতে পারে বলে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। শুক্রবার ঝড়বৃষ্টি হতে পারে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই।
আবহাওয়া দপ্তরের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, এইসময়ে উত্তর, উত্তরপশ্চিম (সমতল অংশ), মধ্য ও পূর্ব ভারতে দুটি থেকে তিনটির বেশি তাপপ্রবাহ সৃষ্টি হতে পারে। সাধারণত দেশে গরমের তিনমাসের পিক টাইমে চার থেকে সাত দফায় তাপপ্রবাহ হয়ে থাকে। এবার সেই সংখ্যা বাড়তে চলেছে।
আবহাওয়া দপ্তরের তরফে এমন ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম ভারতে স্বাভাবিকের থেকে দ্বিগুণ সংখ্যক তাপপ্রবাহ হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া যে রাজ্যগুলিতে স্বাভাবিকের থেকে বেশি তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশার মতো প্রতিবেশী রাজ্যগুলি। ওই তালিকায় আরও রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও কর্ণাটকের উত্তরাংশ।
দেশের বেশিরভাগ অংশে এইসময়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি থাকবে। গরমকালের গরম বেশি ও অধিক সংখ্যক তাপপ্রবাহ দিনের জন্য দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ৯ থেকে ১০ শতাংশ বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন। গত বছর ৩০ মে দেশে ২৫০ গিগাওয়াট বিদ্যুতের রেকর্ড চাহিদা হয়েছিল। গরম বেশি পড়ার জেরে অসুস্থতার বিষয়ে কেন্দ্রীয় আবহাওয়ার দপ্তর সতর্কতা জারি করেছে। কেন্দ্রও এই বিষয়ে রাজ্যগুলিকে সতর্ক করে ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়েছে।
শুরুতেই এল নিনো পরিস্থিতি বিদায় ও বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে গোটা বিশ্বের সঙ্গে ভারতেও গরম বাড়বে এমন আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে গরম ও শুকনো হাওয়া আসলে এবাজ্যে তাপপ্রবাহ হয়। উত্তর ভারতের দিক থেকে আসা ওই গরম হাওয়া বিহার, ঝাড়খণ্ড হয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে। সমতল এলাকায় কোনও জায়গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা অন্তত ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও তা স্বাভাবিকের থেকে কমপক্ষে ৪.৫ ডিগ্রি বেশি হলে তা তাপপ্রবাহ হিসেবে চিহ্নিত হয়।
তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৬.৪ ডিগ্রি বেশি হলে তা তীব্র তাপপ্রবাহ হয়। উপকূল ও পাহাড়ি এলাকায় অবশ্য তাপপ্রবাহের মাপকাঠি যথাক্রমে ৩৭ ও ৩৫ ডিগ্রি। এখনও পর্যন্ত মাপকাঠি অনুযায়ী দক্ষিণবঙ্গে উপকূল এলাকায় স্বল্পকালীন তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে অনেক জায়গায় মার্চ মাসেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে।