NewzBangla Desk : ‘বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন দেশের প্রত্যেক প্রান্তে। কিন্তু বিজেপির কতিপয় নেতা সম্প্রতি একের পর এক নেতা বাংলা ভাগের পক্ষে সুর চড়িয়েছেন, আর সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে মজবুত হয়েছে মমতার অবস্থান। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সোমবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সেই অবস্থানেই সায় দিল বিজেপি। তাও বিধানসভায় দাঁড়িয়ে।
শাসক-বিরোধী (West Bengal) ঐকমত্যের ভিত্তিতে তাই পাশ হয়ে গেল বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব। সেখানে তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়কদের সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হল শপথবাক্য— ‘অখণ্ড পশ্চিমবাংলাকে যে কোনও মূল্যে রক্ষা করব। আমরা বিভাজন চাই না। অবিভক্ত পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নে অঙ্গীকারবদ্ধ।’
এযাবৎকালের রাজনৈতিক খবরের দলিলে নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে সোমবারের বিধানসভার অধিবেশন। বাংলাকে ভাগ করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে তৃণমূল বিধায়কদের আনা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে, তা আগেই নির্ধারিত ছিল। সেইমতো ঘণ্টাখানেক ধরে আলোচনা চলে। কিন্তু প্রস্তাবের উপর আলোচনার শেষাংশে পুরো ঘটনাটাই মোড় নেয় অন্যদিকে।
[আরও পড়ুন : হলদিয়ার গোকুল এগ্রো রিসোর্সে ৮ম শ্রেণী পাশে ১৬০টি নিয়োগ, আর কোন কোন সংস্থায় শূন্যপদে আবেদন জেনে নিন এখনই !] |
আলোচনায় শেষ বক্তা ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক তার আগে বক্তব্য রাখেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তিনি উল্লেখ করেন, ‘প্রস্তাবের বয়ানে শব্দগত কিছু বদল করা হলে আমরাও সমর্থন দেব।’ এরপরই বক্তব্য রাখতে উঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিরোধী দলনেতা যেটা বলছেন, অন্তর্ভুক্ত করুন। প্রস্তাবটি লেখা হোক পশ্চিমবঙ্গ এক থাকবে। বাংলাকে ভাঙতে দেব না। সবাই ঐক্যবদ্ধ।‘
এরপরই পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় নিজের আসন ছেড়ে বিজেপি বিধায়কদের পাশে গিয়ে বসেন। সেখানেই বিরোধী দলনেতার সঙ্গে আলোচনা করে দু’পক্ষের সম্মতিক্রমে মাত্র দু’লাইনের নতুন প্রস্তাব লেখা হয়। তারপর তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়করা একসঙ্গে হাত তুলে ‘অখণ্ড বাংলাকে রক্ষার’ শপথ নেন।
[আরও পড়ুন : Rose Valley : রোজভ্যালির আমানতকারীদের জন্য দুর্দান্ত সুখবর, পুজোর আগেই শুরু হচ্ছে টাকা ফেরতের তোড়জোড় !] |
বিধানসভায় ছিল বিরল দৃশ্যও। কারণ, এদিন মুখ্যমন্ত্রীর পুরো বক্তব্য অধিবেশন কক্ষে বসে শুনেছেন বিজেপি বিধায়করা। একবারের জন্যও হইচই করেননি। এমনকী, রাজ্য সঙ্গীত ও জাতীয় সঙ্গীত উঠে দাঁড়িয়ে একসঙ্গেই গেয়েছেন দু’দলের বিধায়করা।
এই ঐকমত্যের ঘটনা আগামী দিনের জন্য দু’টি দিক নির্দেশ করল। প্রথমত, বিধানসভায় পাশ হওয়া এই প্রস্তাবের বিবরণ দিল্লিতে যাবে। তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি বিধায়করাও যে বাংলা ভাগের পক্ষে নন, তার উল্লেখ থাকবে। দ্বিতীয়ত, যে সমস্ত বিজেপি নেতা ইদানীংকালে বাংলা ভাগের ধুয়ো তুলেছিলেন, তারও সলিল সমাধি ঘটল। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিভেদ, বিচ্ছেদ, বিভাজন নয়। আমরা চাই ঐক্য’।
তিনি আরও বলেন, ‘বিরোধিতার জন্য নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি নয়। সৌজন্য বিনিময় দরকার। আমরা রাজ্যকে ভালোবাসি, দেশকে ভালোবাসি। আমি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো শক্তিশালী করার পক্ষে। তাই নীতি আয়োগের বৈঠকে গিয়েছিলাম বৃহত্তর স্বার্থে। বাংলাকে বঞ্চিত না করে কেন্দ্র এগিয়ে আসুক’।