দিঘা : রাজ্য সরকারের বদান্যতায় আগমী ২রা মে থেকে রাজ্য জুড়ে স্কুলগুলিতে শুরু হচ্ছে গ্রীষ্মাবকাশ। তবে সোমবার ১লা মে’র ছুটি থাকায় শনিবারের বারবেলাতেই শুরু হয়ে গিয়েছে ছুটির আমেজ। সেই সঙ্গে মেঘলা আকাশে কালবৈশাখীর দাপটে তাপপ্রবাহও বিলীন। এমন মনোরম আবহে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে দিঘার হোটেল। শনিবার থেকেই তিল ধারণের জায়গা নেই হোটেলগুলিতে। রবিবার সেই ভিড় বেড়েছে আরও কয়েকগুন। গত কয়েকদিনের খরা কাটিয়ে অবশেষে বানিজ্যে লক্ষ্মীলাভ শুরু হতেই খুশির ঝলকে দেখা মিলেছে দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীদের চেহারায়।
দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীদের সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগেও প্রচন্ড তাপপ্রবাহের জেরে শুনশান হয়ে গিয়েছিল সৈকত নগরী দিঘা। পুলিশের তরফেও বারেবারে পর্যটকদের উদ্দেশ্যে সতর্কবার্তা দিয়ে জানানো হয়েছিল চড়া রোদে সমূদ্র পাড়ে যাতে কেউ না আসেন। এমন পরিস্থিতিতে সমূদ্র সৈকতের পর্যটন বানিজ্য রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়েছিল। পরিবর্তে সমূদ্র ছেড়ে ঠান্ডার দেশ দার্জিলিংয়ে ভীড় জমাচ্ছিলেন ভ্রমণ পিপাষুরা।
তবে গত সপ্তাহে ঈদের সময় থেকেই আবহাওয়া বদলাতে শুরু করে। সেই সঙ্গে দিঘাতেও ভীড় জমাতে থাকেন পর্যটকরা। বিশেষতঃ ঈদের ছুটির আমেজে বহু মানুষ পরিজনদের নিয়ে সমূদ্রের ঢেউয়ের দোলায় গা ভাসাতে ছুটে এসেছেন দিঘায়। আবার সেই ভীড়ের পালে হাওয়া দিয়েছে রাজ্য জুড়ে সরকারী স্কুলের গ্রীষ্মাবকাশ। এমন আবহে ছোট্ট ট্যুরে দিঘায় বেড়িয়ে আসার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না কেউই। যার ফল স্বরূপ শনিবার থেকেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গিয়েছে দিঘার হোটেলগুলি।
দিঘা হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশানের সহ সভাপতি বিপ্রদাস চ্যাটার্জী জানিয়েছেন, “বেশ কিছুদিন ধরেই দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীরা ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছিলেন। তবে ঈদের সঙ্গে স্কুলছুটির জেরে এবার দিঘায় তিল ধারণের জায়গা নেই। এর ফলে কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখবেন ব্যবসায়ীরা”। বিপ্রদাসের দাবী, “গত কয়েকদিনে অধিকাংশ হোটেলেই পর্যটক ভর্তি রয়েছে। তবে শনিবার থেকে সেই ভিড় পাল্লা দিয়ে আরও বেড়েছে”।
প্রসঙ্গতঃ রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দিঘার চেহারা আমূল বদলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমূদ্র সৈকতের সৌন্দর্যায়নে বিপুল টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। ইয়াসের সময় সমূদ্র সৈকত ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও খুব অল্প সময়েই সেই ক্ষতচিহ্ন সম্পূর্ণ উধাও। এখন দিঘার সৈকত রীতিমতো ঝাঁওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘার বিস্তীর্ণ সৈকত সরণীর ঘটেছে বহুদূর পর্যন্ত। সেই সঙ্গে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য রয়েছে একাধিক মনোরম পার্ক, মিউজিয়াম, টয়ট্রেন, সায়েন্স সিটির মতো জায়গা। সেই সঙ্গে পুরীর আদলে নির্ণীয়মান জগন্নাথ মন্দির দিঘার মুকুটে এক নতুন পালক সংযোগ করবে সন্দেহ নাই।