চন্ডীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর : বৃহস্পতিবার রাত্রি প্রায় ১০.১৫টা নাগাদ দিঘা নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়কের চন্ডীপুরের কাছে একটি দ্রুতগতির গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারালেন স্থানীয় এক যুবক। সাইকেলে চেপে ওই যুবক সেই সময় রাস্তা পারাপার করছিলেন। মারাত্মক যখম অবস্থায় ওই যুবককে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত যুবকের নাম সেক ইসরাফিল (৩৩)। তিনি চন্ডীপুরের ভৈরবপুর এলাকার বাসিন্দা বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
তবে এই ঘটনা কিছু সময় বাদেই অন্যদিকে মোড় নেয় যখন স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ আনেন, এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ের ধাক্কায়। কনভয়ের সামনের দিকে থাকা গাড়ির ধাক্কাতেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। এরপরেই স্থানীয়রা রাস্তায় টায়ার জ্বেলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেফতারের দাবীতেও সরব হতে দেখা যায় স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দাকে।
এই ঘটনার জেরে ১১৬বি জাতীয় সড়ক সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। দিঘা গামী বহু গাড়ি সার দিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত চন্ডীপুর থানার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহটিকে উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর সাইকেলটিকেও তুলে নিয়ে গিয়েছে। তবে এই ঘটনার জন্য শুভেন্দু অধিকারীর কনভয় দায়ী কিনা তা এখনও সরকারী ভাবে জানানো হয়নি। ইতিমধ্যে ঘটনার খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন চন্ডীপুরের বিডিও, ওসি চন্ডীপুর এবং নন্দীগ্রাম থানার আইসি।
গোটা ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে জানাল, “চন্ডীপুরে দুর্ঘটনা একটা ঘটেছে। শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ের ধাক্কায় দুর্ঘটনা বলে অভিযোগ এসেছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখছি। এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পাশাপাশি ঠিক কি ঘটনা ঘটেছে সেটা আমরা খতিয়ে দেখার পরেই এই নিয়ে বিশদ বলতে পারব”। তিনি আরও জানান, “এই ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর এসেছে। বিশদে তদন্ত চলছে। তারপরেই সবদিক খোঁজ নিয়ে আমরা প্রকৃত ঘটনা কি ঘটেছে সেই সম্পর্কে মন্তব্য করতে পারব”।
এর আগেও কাঁথি থেকে যাতায়াতের পথে একাধিকবার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে শুভেন্দু অধিকারীর গাড়ি। সেই নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি রাজ্যজুড়ে। মারিশদার কাছে একটি পেট্রল পাম্পের দিকে বাস ঢুকতে গেলে শুভেন্দুর কনভয়ের সামনের গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। পরে আবারও একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল ওই রাস্তায় এমনটাই খবর সূত্রের। শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারীও একবার নন্দকুমার থেকে কাঁথি যাওয়ার পথে চন্ডীপুরের মগরাজপুরের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। তবে কোনওবার প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।