মহিষাদল : স্বামীর সঙ্গে বৌদির পরকীয়ার সম্পর্ক জানাজানি হওয়ায় পরিবারে শুরু হয় চরম অশান্তি। আর সেই রাগেই স্ত্রী ও সাত মাসের কন্যাকে প্রাণে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। মৃত মহিলার নাম সোনম খাতুন (২৩) ও সালোনি খাতুন (৭ মাস)। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানার লক্ষ্যা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গাজীপুর গ্রামে। ঘটনার খবর পেয়ে দেহদুটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। শনিবার দেহদুটি ময়না তদন্তের জন্য হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। মৃতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই মহিলার স্বামী ও বৌদিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতের দিকে সোনমের ঝুলন্ত দেহ তাঁর শোওয়ার ঘরে দেখতে পাওয়া যায়। বিছানাতেই পড়েছিল ৭ মাসের শিশুর নিথর দেহ। ঘটনা জানাজানি হতেই স্থানীয়রা ছুটে আসে ওই বাড়িতে। পরে খবর পেয়ে চলে আসে মৃতার বাপের বাড়ির পরিজনেরা। এরপরেই দুই পক্ষ্যের মধ্যে ব্যাপক ঝামেলা বাঁধে। মেয়েকে খুন করা হয়েছে দাবী জানিয়ে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেদের মারধর করা হয়। রাতের দিকে ঘটনার খবর পেয়ে আসে মহিষাদল থানার পুলিশ। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবীতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে বাসুলিয়া গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে জানান।
মৃতের বাবা তমলুকের বাসিন্দা রওশন আলির অভিযোগ, “গতকাল বিকেল থেকে মেয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু কেউ ফোন ধরেনি। এই নিয়ে কিছুটা উৎকণ্ঠায় ছিলাম আমরা। পরে রাতের দিকে মেয়ের এক প্রতিবেশী ফোন করে জানায় আমার মেয়ে ও ৭ মাসের নাতনিকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা খবর পেয়েই তড়িঘড়ি ছুটে আসি, এসে তাঁদের নিথর দেহ বিছানায় পড়ে থাকতে দেখলাম”।
তিনি আরও জানান, “প্রায় ২ বছর আগে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলাম দেখাশোনা করে। জামাই কাজের সূত্রে প্রায়ই বাইরে থাকত। সেই সময় মেয়ে বাপের বাড়িতেই বেশীরভাগ সময় কাটাত। পরে জামাই বাড়ি ফিরলে মেয়েও শ্বশুরবাড়িতে চলে যায়। তবে দিন ১৫ আগে জামাইয়ের সঙ্গে তাঁর বৌদির অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে আমরা জানতে পারি। এই নিয়ে পরিবারে অশান্তি শুরু হয়। এরই মাঝে শুক্রবার মেয়েকে খুন করেছে পরিবারের লোকেরা মিলে”।
যদিও হলদিয়ার মহকুমা পুলিশ আধিকারীক SDPO রাহুল পান্ডে জানিয়েছেন, “আমরা এখনও লিখিত কোনও অভিযোগ পাইনি। আমরা দেহদুটিকে ইতিমধ্যেই ময়না তদন্তে পাঠাচ্ছি। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃতার স্বামী শেখ সলমনকে আটক করা হয়েছে। কিভাবে এই ঘটনা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে”।