নিউজবাংলা ডেস্ক : রাজ্যে তৃণমূলের সরকারের বিরুদ্ধে খয়রাতির রাজনীতির অভিযোগ তুলে বছরভর সরব থাকে বিজেপি। রাজ্যে বেকারদের চাকরীর পরিবর্তে লক্ষ্মীর ভান্ডার সহ বিভিন্ন ভাতা দেওয়ার বিরুদ্ধেই যুব সমাজকে সর্বদা উজ্জীবিত করে গেরুয়া বাহিনী (Panchayet Election 2023)। অথচ এবারের পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে সেই খয়রাতির রাজনীতিকেই হাতিয়ার করছেন বিজেপির প্রথম সারির নেতৃত্বরা।
এ বারের পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে সেই ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ই হয়ে উঠেছে প্রচারের বিষয়। মহিলাদের জন্য ওই প্রকল্পের ‘সুফল’ দেখিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই ভোট চাইছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু ‘খয়রাতির রাজনীতি’ নিয়ে তাদের আগের অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ ঘুরে গিয়ে মহিলাদের জন্য মাসিক দু’হাজার টাকা আর্থিক সহায়তার কথা বলছে বিজেপিও। বেকারদের চাকরীর প্রতিশ্রুতি নিয়ে রা কাড়ছেন না এঁরাও। এর অর্থ রাজ্যে পালাবদল ঘটলেও বেকারদের জীবনে যে কোনও পরিবর্তন আসবে না তা আর কহতব্য নয়।
প্রশ্নের মুখে নানা ব্যাখ্যা দিলেও ভোট টানতে অনুদানের রাজনীতি যে তাঁদেরও হাতিয়ার, বোঝা যাচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্যেই। কংগ্রেসও তাদের পঞ্চায়েত ইস্তাহারে মহিলাদের স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা সহায়তার দাবি তোলার কথা বলেছে। বিরোধীদের এমন অবস্থান দেখে এখন কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না শাসক দল।
পঞ্চায়েতের প্রচারে নদিয়ায় গিয়ে মঙ্গলবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ফের বলেছেন, ক্ষমতায় এলে তাঁরা মহিলাদের মাসে দু’হাজার টাকা করে অর্থিক সহায়তা দেবেন। সে প্রকল্পের নাম হবে ‘অন্নপূর্ণার ভান্ডার। এমনকি, আগামী লোকসভা ভোটে জিতে বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফিরলে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই এই প্রকল্প চালুর সিদ্ধান্ত হবে বলেও ইতিমধ্যে দাবি করেছেন শুভেন্দু।
বিরোধী দলনেতা যখন এমন দাবি করছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন পঞ্চায়েতের প্রচারেই ঘোষণা করেছেন, “লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের প্রাপকেরা ৬০ বছর হয়ে গেলে এক হাজার টাকা করে পাবেন।” এখন দেওয়া হয় মাসে ৫০০ টাকা। কোমর ও পায়ের ব্যথার জন্য সশরীরে আর প্রচারে বেরোচ্ছে না মুখ্যমন্ত্রী। আউশগ্রামের গোপীনাথপুরে এ দিন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের মোবাইল মারফত বক্তৃতা করেছেন তিনি। সেখানেই লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে ঘোষণা করার পাশাপাশিই মমতা বলেছেন, “আমি চাই, মেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়াক। মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দেবেন না। আপনারা আমদের পরিবার।”