দিঘা, পূর্ব মেদিনীপুর : উত্তর বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের জেরে মঙ্গলবার থেকেই ব্যাপক বৃষ্টির দাপট শুরু হয়েছে কলকাতা সহ বিস্তীর্ণ দক্ষিণবঙ্গে। বাদ যাচ্ছে না সমূদ্র তীরবর্তী দিঘা ও সংলগ্ন মন্দারমনি, তাজপুর, শংকরপুর সহ উপকুলবর্তী এলাকা (Digha Rough Sea)। মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই আবহাওয়ায় ব্যাপক অবনতি হয়েছে এই এলাকাগুলিতে।
ঘন কালো মেঘে মুখ ঢেকেছে আকাশ। বুধবার সকাল থেকে বৃষ্টির দাপট কিছুটা কমলেও ব্যাপক ঝড়ো হাওয়া বইছে এলাকায়। এদিকে পূর্ণিমার ধাক্কায় জলস্তর অনেকটাই বেশী হওয়ায় সমূদ্রও যথেষ্ট উত্তাল হয়ে উঠেছে। দিঘার প্রশাসনিক মহলের খবর, এই মুহূর্তে দিঘায় আবহাওয়া খারাপ থাকায় পর্যটকদের সমূদ্র স্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গার্ডওয়াল ছাপিয়ে জল আছড়ে পড়ছে সমূদ্রতটের ওপরে। তাই কোনও ভাবেই যেন পর্যটকরা এই মুহূর্তে গার্ডওয়ালে না উঠে পড়েন বা সমূদ্রে না নামেন সে বিষয়ে নজরদারী রাখার জন্য নুলিয়া ও পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে মৎস্যজীবিদেরও গভীর সমূদ্রে নামতে নিষেধ করা হয়েছে।
দিঘা হোটেলিয়ারর্স অ্যাসোসিয়েশানের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চ্যাটার্জী জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে দিঘার হোটেলে পর্যটক কিছুটা কম রয়েছে। তবে সবাইকেই সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বিপজ্জনক অবস্থায় কোনও ভাবেই যেন সমূদ্র স্নানে কেউ না নামেন সে বিষয়ে সচেতনতার প্রচার চালানো হচ্ছে”। তবে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মঙ্গলবার বেলার দিক থেকেই দিঘার প্রশাসনের তরফে মাইক প্রচার শুরু হয়েছে পর্যটকদের উদ্দেশ্যে। উত্তাল সমূদ্রে পর্যটকদের স্নানে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে নুলিয়া ও কর্তব্যরত পুলিশ এবং সিভিক ভলেন্টিয়ার ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এদিন বেলার দিকে সমূদ্রের চেহারা ভয়াবহ উত্তাল হয়ে ওঠে। গার্ডওয়াল টপকে আছড়ে পড়তে থাকে বড় বড় ঢেউ। পূর্ব মেদিনীপুরের সদ্য প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি উত্তম বারিক জানিয়েছেন, “আবহাওয়ার অবনতি হওয়ায় পর্যটকদের সমূদ্র স্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সেই সঙ্গে সমূদ্র তীরবর্তী এলাকাগুলির পরিস্থিতির ওপরেও নজরদারী রাখা হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে আবহাওয়া অশান্ত থাকায় সমস্ত প্রশাসনিক বিভাগকে তৈরি রাখা হয়েছে”।
এরই পাশাপাশি দিঘা ফিসারম্যান এন্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশানের সভাপতি শ্যামসুন্দর দাস জানান, “আবহাওয়া দফতরের নির্দেশ মতো এই মুহূর্তে মৎস্যজীবিদের নতুন করে গভীর সমূদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে যারা সমূদ্রের গভীরে গিয়েছেন তাঁদেরও ফিরে আসতে বলা হয়েছে। পূর্ণিমার ভরা কোটালের সঙ্গে খারাপ আবহাওয়ায় সমূদ্র যথেষ্ট উত্তাল হয়ে রয়েছে। সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য জানানো হয়েছে”।