Haldia, NewzBangla : হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের প্রাণ কেন্দ্রে রাতভর তান্ডব চালাল একদল সশস্ত্র ডাকাত দল। শুক্রবার গভীর রাতে হলদিয়া পুরসভার ৫নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার জয়ন্তী রায় দন্ডপাটের বাড়িতে ডাকাতরা হামলা চালায় ডাকাতেরা। ৮ থেকে ১০ জনের দলটির কারও হাতে ছিল ধারালো অস্ত্র, কারও হাতে আবার পিস্তল। একাধিক গেট ভেঙে বাড়ির ভেতরে ঢুকে নগদ টাকা সহ সোনার গহনা লুঠ করে নিয়ে পালায়। সেই সঙ্গে (Haldia Dacoit) ওই বাড়িতে থাকা একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫টি মোবাইল ফোনও নিয়ে পালিয়েছে ডাকাত দলটি। জনবহুল এলাকায় এমন ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘিরে রীতিমতো আতংকিত এলাকাবাসীরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দুর্গাচক থানার পুলিশ।
সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত্রি প্রায় আড়াইটে নাগাদ দুর্গাচকে ঘন বসতী এলাকায় প্রায় ৮ থেকে ১০ জনের ডাকাতদের দলটি প্রাক্তন কাউন্সিলারের তিনতলা বাড়ির গেটের তালা ভেঙে বাড়িতে ঢোকে। নীচের তলায় থাকা ভাড়াটিয়ার ঘরে প্রথমে ঢোকে ডাকাতদলটি। এরপর সিঁড়িতে থাকা প্রায় তিনটি গেট ভেঙে তিনতলায় ওঠে ডাকাত দলটি। ওপরে গিয়ে কাউন্সিলারের স্বামীকে প্রথমে জাগায় দুষ্কৃতীরা। এরপর তাঁকে ভয় দেখিয়ে অসুস্থ স্ত্রীর ঘরের দরজা খুলতে বাধ্য করে।
এরপর ঘরে ঢুকে সব লন্ডভন্ড করে বাড়িতে থাকা নগদ টাকা সহ সোনার গহনা লুঠ করে। রাতভর তান্ডব চালানোর পর ভোর প্রায় ৪টে নাগাদ দুষ্কৃতীদলটি এলাকা ছেড়ে পালায়। সকালে ঘটনার খবর পেয়ে দুর্গাচক থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। কিভাবে ডাকাতদল এই জনবহুল এলাকায় রাতভর দাপিয়ে বেড়াল তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
প্রাক্তন কাউন্সিলার জয়ন্তী রায় দণ্ডপাট জানান, “দুষ্কৃতীরা প্রথমে আমার স্বামীর ঘরে ঢুকে তাঁকে পাকড়াও করে এনে তারপর আমাকে দরজা খুলতে বলে। আমি ভয় পেয়ে দরজা খুলতেই তাঁরা টাকা ও গহনা চায়। ওদের জানাই বাড়িতে তেমন কিছুই নাই। এরপরেই ওরা গোটা ঘর তছনছ করে দেয়। সেই সঙ্গে আমার সঙ্গে থাকা সামান্য সোনার গহনা সহ আলমারি ও অন্যান্য জায়গা রাখা গহনাগুলিকে বের করে আনে”।
জয়ন্তী জানান, “বাড়িতে থাকা নগদ ২০ হাজার টাকা সহ প্রায় ১৫ ভরি সোনার গহনা লুঠ করে পালিয়েছে”। তিনি জানান, “ওদের মধ্যে একজনের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। এবং নীচে থাকা এক দুষ্কৃতীরা হাতে পিস্তল ছিল। ভোর ৪টে ২০ তে ওরা বেরিয়ে গেল”।
আরও পড়ুন : |
[Purba Medinipur Women Helpline : আরজিকর থেকে শিক্ষা নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরে চালু হল মহিলা সুরক্ষা নম্বর, সাহায্য পাবেন দিঘার পর্যটক থেকে আম জনতাও] |
কাউন্সিলারের স্বামী বিকাশ রঞ্জন রায় জানান, “রাত্রি প্রায় আড়াইটে নাগাদ আচমকাই কয়েকজনের ডাকাডাকিতে আমার ঘুম ভেঙে যায়। ভয়ে আতংকে আমার শরীর অসুস্থ বোধ করি। তখন ডাকাতরা আমাকে জল এনে খেতে দেয়। এবং বাড়িতে থাকা টাকা পয়সা দিতে বলে”।
তিনি জানান, “এই সময় বাড়িতে কিছুই নেই জানানোয় ডাকাতরা বলে সব খবর নিয়েই এখানে এসেছে। এরপর আমাকে ভয় দেখিয়ে স্ত্রীর ঘরের দরজা খুলতে বলে। এরপর কোনও রকম প্রতিরোধ ছাড়াই ভোর প্রায় ৪টে পর্যন্ত গোটা ঘর তন্নতন্ন করে তল্লাশি করে। শেষ পর্যন্ত আমাদের ঘরের ভেতরে পাখার তলায় বসিয়ে দিয়ে চলে যায়। সেই সঙ্গে যাওয়ার সময় সবার মোবাইলগুলো ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে ওই ডাকাতেরা”।