হলদিয়া: শ্রমিকদের রীতিমতো অন্ধকারে রেখে বেতন কাঠামোর চুক্তি স্বাক্ষর করেছে শিল্পসংস্থা, এমনই গুরুতর অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হলদিয়ার হিন্দুস্তান লিভার কারখানার গেটে বিক্ষোভে (Haldia Agitation) সামিল হল কর্মীরা। বিক্ষোভকারীদের দাবী, নতুন বেতন চুক্তি তৈরির সময় শ্রমিকদের সঙ্গে নেওয়া হয়নি। এর ফলে ন্যাহ্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন কারখানার শ্রমিকরা। তাই বর্তমান চুক্তিপত্র বাতিল করে নতুন সিওডি না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে বলেই শ্রমিকরা দাবী জানিয়েছেন।
সূত্রের খবর, দীর্ঘ প্রায় ২ বছর ধরে হলদিয়ার হিন্দুস্তান নিলিভার সংস্থার চুক্তিভিত্তিক ও অস্থায়ী কর্মীদের বেতন চুক্তি পুনরনবীকরণ বন্ধ ছিল। বুধবার শ্রম দফতরের আধিকারীক সহ জেলা শাসক, হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান, সিইও, হলদিয়ার মহকুমা শাসক সহ তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ানের প্রতিনিধির পাশাপাশি শিল্প কারখানার প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এই সংস্থার নতুন বেতন চুক্তিতে স্বাক্ষরিত হয়।
হিন্দুস্তান লিভারে কর্মরত প্রায় ২৮২ জন শ্রমিকদের প্রায় ২২ মাস ধরে চুক্তি বকেয়া ছিল। এবার নতুন চুক্তিতে শ্রমিকদের গড়ে ৪২০০ টাকা করে বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই বর্ধিত বেতন কার্যকর হচ্ছে ২০২৩ সালের ১ মার্চ থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত।। অতিরিক্ত বকেয়া বেতন প্রতিমাসে ১৯০০ টাকা এরিয়ার হিসেবে দেওয়া হবে। একই দিনে হলদিয়ার লালবাবা সিমলেস নামের একটি সংস্থারও নতুন বেতন কাঠামোর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
তবে এই নতুন বেতন চুক্তি মানতে রাজি নয় শ্রমিকরা। এদিনের বিক্ষোভে সামিল হিন্দুস্তান লিভারের দেবাশীষ দে, সম্রাট সামন্তরা জানান, “হাইস্কিলের কর্মী হয়েও উপযুক্ত বেতন পাচ্ছি না। আনস্কিলের ক্ষেত্রেও বঞ্চনা করা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এরপরেও শ্রমিকদের না জানিয়েই নতুন বেতন চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এই চুক্তি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে”।
ঘটনার খবর পেয়েই কারখানার সামনে ছুটে যান হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তাপসী মন্ডল। শ্রমিকদের দ্রুত কাজে ফেরার আবেদন জানানোর পাশাপাশি তাপসীর দাবী, “শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা না করে ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের অনুপস্থিতিতে নতুন বেতন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই বেতন চুক্তি বাতিল করার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাব। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নতুন বেতন চুক্তি তৈরি হবে” বলেই আশ্বস্ত করেছেন তিনি।