নিউজবাংলা ডেস্ক : বিভিন্ন জব পোর্টাল, ওয়েব সাইট খুললেই মোটা বেতনে বেসরকারী ব্যাঙ্কে চাকরীর টোপ দিয়ে ঝাঁ চকচকে বিজ্ঞাপনে চোখ ধাঁধিয়ে যাবে আপনার। কিন্তু এই চাকচিক্যের আড়ালেই লুকিয়ে রয়েছে একাধিক প্রতারণা চক্রের ফাঁদ (Job Scam)। এমনই একটি চক্রের পর্দা ফাঁস করল কলকাতার হেয়ারস্ট্রিট থানা। ইতিমধ্যেই এমন এক প্রতারণা চক্রের পান্ডা এক মহিলা সহ দু’জনকে পুলিস গ্রেফতার করেছে।
তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পেরেছে, এই প্রতারণা চক্রের কোনও অফিসই বেশিদিন স্থায়ী হতো না। খুব বেশি হলে দু’মাস। তারপর নতুন অফিস। আর সেখানে গিয়েই বদলে যেত মালিকের নাম। কখনও দেবস্মিতা, কখনও মৌ, কখনও পায়েল, কখনও আবার রিয়া। একেক জায়গায় একেক নাম। এভাবেই মোট ১২ বার নাম বদলেছে সে।
এই মহিলাই বেসরকারি ব্যাঙ্কে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণায় মূল অভিযুক্ত। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে গিয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছেন হেয়ার স্ট্রিট থানার তদন্তকারীরা। প্রসঙ্গত, শনিবার ধর্মতলার গভর্নমেন্ট প্লেসের (ইস্ট) একটি অফিসে হানা দিয়ে ওই মহিলা সহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। অফিসে তল্লাশি চালিয়ে জাল রবার স্ট্যাম্প, বেসরকারি ব্যাঙ্কের একাধিক ভুয়ো নিয়োগপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পুলিস সূত্রের খবর, বেসরকারি ব্যাঙ্কে চাকরি দেওয়ার নাম করে তরুণতরুণীদের টোপ দেওয়া হতো। ‘ড্রিমস টু রিয়েলিটি অব কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে অফিস খুলে চলত প্রতারণা। বেকার তরুণ-তরুণীরা চাকরির জন্য আবেদন করলে ন্যূনতম ৪০-৫০ হাজার টাকা দাবি করা হতো। কয়েকদিন পর তাঁদের ডেকে নিয়োগপত্র ধরিয়ে দিত এই ছদ্মবেশী মহিলা। তাতে লেখা থাকত ব্যাঙ্কের নাম, ব্রাঞ্চ, চাকরিপ্রার্থীর নাম ও নিয়োগের তারিখ।
সেইমতো নির্দিষ্ট দিনে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিত এই মহিলা। সে এই প্রতারণা অফিসের ফ্রন্ট ডেস্কে কাজ করত বলে পুলিস সূত্রের খবর। নিয়োগপত্র দেওয়ার পর অফিস বদল করত অভিযুক্তরা। পরে সেই ভুয়ো নিয়োগপত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চে গিয়ে চাকরিপ্রার্থী জানতে পারেন, পুরোটাই ভুয়ো। প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছেন তাঁরা। অভিযুক্তদের জেরা করে পুলিস জানতে পেরেছে, শহরের একাধিক জায়গায় ঘর ভাড়া নিয়ে চলত এই অফিস। প্রতিটি অফিসে নতুন নতুন নাম নিয়ে প্রতারণার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল অভিযুক্তরা। সম্প্রতি এমনই এক প্রতারিত চাকরিপ্রার্থী হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ জানান। তারপর সংশ্লিষ্ট অফিসে হানা দেয় পুলিস।