ময়না : বকেয়া টাকা চাইতেই শ্রমিককে ইট ভাটার গনগনে আগুনে ঠেলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ভাটারই দুই মালিকের বিরুদ্ধে। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই শ্রমিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে (Moyna Crime)। সোমবার রাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থানার দুবরাজপুরে কেজিবি ইটভাটায়। আহত শ্রমিক শুভঙ্কর কোটাল (২৩) এই মুহূর্তে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালে।
আহতের পরিবারের দাবী, এই ঘটনায় ভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে ময়না থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ অভিযোগ না নিয়েই ফিরিয়ে দিয়েছে। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে যুবকের এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারে। শুভঙ্করের শরীরের অধিকাংশই (পায় ৮৫%) পুড়ে গিয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। এই মুহূর্তে তাঁর অবস্থা সংকটজনক।
জখম যুবকের মামা কার্ত্তিক সরকার জানিয়েছেন, “হলদিয়ার সুতাহাটা থানার কুকড়াহাটি অঞ্চলের মতিরামপুর গ্রামে শুভঙ্করের বাড়ি। দরিদ্র পরিবারে একমাত্র রোজগেরে ছেলেটিকে মাস তিনেক আগে প্রায় ১৪ হাজার টাকা বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজে নিয়ে যায় কেজিবি ইটভাটার মালিক গোপাল বর্মন এবং রাম হাজরা। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও বেতন মিলছিল না। এরপর বাড়ি ফিরে আসে শুভঙ্কর”।
কার্ত্তিক আরও জানিয়েছে, “এরপর শুভঙ্করকে পুনরায় কাজে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভাটার মালিকরা বাড়িতে এসে ৫ হাজার টাকা মিটিয়ে দেয়। এবং প্রতিশ্রুতি দেয় শীঘ্রই বাকী টাকাও মিটিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি রাখা হয়নি। এরপর গত ১৩ ফেব্রুয়ারী সোমবার রাতের দিকে দুই ভাটার মালিকের সঙ্গে টাকা নিয়ে শুভঙ্করের পুনরায় বচসা হয়। সেই সময়ই তাঁকে ভাটার গনগনে আগুনে ঠেলে ফেলে দেয় দুই মালিক। সেই সময় ভাটার কয়েকজন কর্মী গুরুতর জখম অবস্থায় শুভঙ্করকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে”।
তবে এই ঘটনার পর মঙ্গলবার ময়না থানায় অভিযোগ জানাতে যান শুভঙ্করের বাবা ও পরিজনেরা। কিন্তু পুলিশ কোনও অভিযোগ না নিয়েই তাঁদের ফিরিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ময়না থানার ওসি গোপাল পাঠকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও উত্তর দিতে চাননি। যদিও পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে. জানিয়েছেন, “ঘটনাটি জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখছি কি ঘটেছে”। সেই সঙ্গে গোটা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।