নিউজবাংলা ডেস্ক : নিছক পারিবারিক বিবাদের জেরে নিজের স্ত্রী সন্তান সহ শ্বশুরবাড়ির একাধিক সদস্যকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা করল এক ব্যক্তি। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানার নামালখ্যার (Purba Medinipur) নাইকুন্ডি গ্রামে।
ঘটনাটি জানাজানি হতেই অভিযুক্ত সেক আবু (৪৮)কে পাকড়াও করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে ব্যাপক গণধোলাই দেয় গ্রামবাসীরা। পরে খবর পেয়ে নন্দকুমার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ঘাতক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। সেই সঙ্গে আহতদের প্রথমে নন্দকুমার ও পরে তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ আচমকাই একটি ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রথমে নিজের স্ত্রী আসমা বিবি (৩২) এর ওপর চড়াও হয় অভিযুক্ত আবু। মা’কে বাঁচাতে গিয়ে অস্ত্রের ঘায়ে জখম হয় ছেলে আজাদ। এরপর একে একে খুড়তুত শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও দাদা শ্বশুরকেও কুপিয়ে খুনের চেষ্টা করে অভিযুক্ত ব্যক্তি। স্থানীয়দের দাবী, দীর্ঘদিন ধরেই শ্বশুর বাড়িতে ঘর জামাই হিসেবে থাকত অভিযুক্ত। তাঁকে নিয়ে মাঝে মধ্যেই পরিবারে অশান্তি লেগে ছিল। আজ হঠাৎ করে অভিযুক্ত ব্যক্তির এমন হামলায় সকলেই হতচকিত হয়ে পড়ে।
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে ওই ব্যক্তিকে পাকড়াও করে। এরপর তাঁকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে বেধড়ক মারধর চলতে থাকে। গণধোলাইয়ে ওই ব্যক্তি জখম হয়। তবে তাতেও ঘাতককে নির্বিচারে পেটাতে থাকে এলাকাবাসীরা। খবর পেয়ে নন্দকুমার থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে এসে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের হাত থেকে অভিযুক্ত ঘাতককে উদ্ধার করে নন্দকুমার হাসপাতালে নিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তাঁর অবস্থা সঙ্গীন হওয়ায় তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্ত্রী আসমা বিবি জানান, “২০০৭ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমাকে মাঝে মধ্যেই মারধর করত। আগেও একবার আমার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল। তখন আমার মা বাড়ি নিয়ে চলে আসে। প্রায় বছর ৫ পর আবার আমার বাপের বাড়িতে এসে ক্ষমা চেয়ে থাকতে শুরু করে। আজকে একটু নেশা করেছিল। তখন আমি বলেছিলাম, কেন নেশা করে বাড়ি এসেছ। এরপরেই স্বামী কাটারি নিয়ে আমার গলায় কোপ বসিয়ে দেয়। তখন ছেলে ছাড়াতে এলে তাঁকে কোপ বসিয়ে দেয়। এরপর আমার মা ছাড়াতে এলে তাঁকেও কোপ বসিয়ে দেয়। আমি ভয় পেয়ে পালিয়ে আসি বাইরে। সেই সময় আমার বড় জ্যেঠু, জেঠাইমা সবাইকে কুপিয়েছে। ৬ জনকে কোপ বসিয়েছে। আমরা ওর কঠোর শাস্তি চাই”।