মহিষাদল, পূর্ব মেদিনীপুর : পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়নি এখনও। তার আগেই আচমকা নন্দীগ্রামের হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বিজেপি। তৃণমূলের দাবী, এটা আসলে বিজেপির চমক। রাজ্যের ৬০ শতাংশ আসনে বিজেপি প্রার্থীই দিতে পারবে না বলেই দাবী করেছেন মহিষাদলের তৃনমূল বিধায়ক তিলক কুমার চক্রবর্তী। রাজ্য জুড়ে রাস্তাশ্রী প্রকল্পের শিলান্যাসের অঙ্গ হিসেবে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলেও মঙ্গলবার এই প্রকল্পের উদ্ঘাটন বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই দাবী জানিয়েছেন তিনি।
মহিষাদলের তৃনমূল বিধায়কের দাবী, “বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বরাই দাবী করছেন রাজ্যে অধিকাংশ পঞ্চায়েতে প্রার্থী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ ৬০ শতাংশ পঞ্চায়েতে এখনও কোনও সংগঠনই গড়ে তুলতে পারেনি বিজেপি। এটা আমার কথা নয়, বিজেপি নেতারাই এই নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করছেন”। তিলকের প্রশ্ন, “রাজ্য জুড়ে হাজার হাজার পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে কেবলমাত্র নন্দীগ্রামের ১টি পঞ্চায়েতের গুটিকয় প্রার্থীর তালিকা কেন প্রকাশ করা হল। এটা আসলে চমক। একজন নেতা নিজের ক্ষমতা জাহির করতে এমনটা করেছেন।
তিলকের মতে, “পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার আগে কোনও দল এভাবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে কিনা এমনটা নজির অতীতে নজরে আসেনি”। তিলকের মতে, “বিজেপির এমন কোনও সংস্কৃতি আছে বলে শুনিনি কখনও। ওদের এত বড় সংগঠন, একটা পঞ্চায়েতে আগাম প্রার্থী ঘোষণা করে দলের কর্মীদের চাঙ্গা করার বৃথা চেষ্টা চালাচ্ছেন এখানকার বিজেপি নেতৃত্বরা। চাইলে এখনই রাজ্যের সমস্ত আসনের প্রার্থী তালিকা আগে থেকেই ঘোষণা করে দেখান” মন্তব্য তিলকের।
তৃণমূলের পাল্টা বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন কুমার ব্যানার্জীর দাবী, “তৃনমূল দলে এখন অন্তরদ্বন্দ্ব চরমে। ওদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা নিয়ে দলের অন্দরে চূড়ান্ত ঝামেলা চলছে। আগে ওরা নিজেদের ঘর সামলাক, তারপর বিজেপির দিকে দেখবে”। তপনের মতে, “ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিটি আসনেই প্রার্থী তালিকা প্রায় তৈরি”। সেই সঙ্গে নন্দীগ্রামে হরিপুর পঞ্চায়েতে প্রার্থী তালিকা প্রকাশের ঘটনায় দলের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বলে দাবী করেছেন তপন। তাঁর মতে, “ইতিমধ্যে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানিয়ে দিয়েছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা জেলা থেকেই ঘোষণা হবে। নন্দীগ্রামে যা হয়েছে তা দলের নিয়ম মেনেই হয়েছে। এই নিয়ে অযথা জল ঘোলা করার চেষ্টা হচ্ছে”।
তিলক জানান, “গোটা রাজ্যের মধ্যে কেবলমাত্র মহিষাদল বিধানসভা এলাকাতেই প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা (৬,৫৪,৮১,৫০০.০০) ব্যায়ে ২০টি রাস্তার কাজের আজ সূচনা হয়েছে। ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ প্রকল্পে এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষের সমস্যার কথা জেনেই বিভিন্ন এলাকার রাস্তার উন্নয়নের বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। তার মধ্যে ২০টি প্রকল্পের অনুমোদন মিলেছে। এই কাজগুলি দ্রুত শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে”। তিলকের দাবী, “উন্নয়নের নিরিখেই মানুষ এবার ভোট দেবেন। দিদির নানান জনমুখী প্রকল্প বনাম কুৎসা আর অপপ্রচারের লড়াই হচ্ছে এবার। বিজেপি যতই এজেন্সীর ভয় দেখিয়ে তৃনমূলকে দমাতে চেষ্টা করবে ততই তৃনমূল ভালো ফল করবে”।