নিউজবাংলা : জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুর ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি ইউরোপে একটি তৃতীয় ডিভিশন ফুটবল ক্লাবের শেয়ার কিনেছেন। কিন্তু তিনি এই বিপুল পরিমাণ টাকা পেলেন কোথায়? তা জানতেই এবার তদন্তে নেমেছে ইডি৷ বর্তমান বনমন্ত্রী (Jyotipriya Mallick) তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত কাছের লোক বলে পরিচিত ওই প্রভাবশালীর বাড়িতে ইতিমধ্যে তল্লাশি চালিয়েছেন গোয়েন্দারা। সেখান থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া বিভিন্ন নথির সূত্রেই বিষয়টি তদন্তকারীদের নজরে আসে।
তদন্তকারীরা জেনেছেন, গত কয়েক বছরে মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ ওই ব্যক্তির জীবনযাত্রা রাতারাতি বদলে যায়। পুরনো ব্যবসাও ফুলেফেঁপে ওঠে। ব্যবসায়িক কাজের কথা বলে তিনি মাঝেমধ্যে ইউরোপ পাড়ি দিতেন। সেই সুবাদে সেখানকার তৃতীয় ডিভিশনে খেলা একটি ফুটবল ক্লাবের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ গড়ে ওঠে। একটা সময় ক্লাবের শেয়ার কিনতে চেয়ে তিনি কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দেন।
“আরও পড়ুন : বোলপুরের পর দিঘা, জ্যোতিপ্রিয় গ্রেপ্তার হতেই আলোচনার কেন্দ্রে নিউ দীঘার চারটি হোটেল !”
সংশ্লিষ্ট ক্লাব কর্তৃপক্ষ রাজি হয়ে যায়। এর জন্য কয়েক কোটি টাকা ওই প্রভাবশালীকে খরচ করতে হয়েছে। তদন্তকারীদের ধারণা, রেশন দুর্নীতির টাকার একটা বড় অংশ এভাবেই লগ্নি করা হয়েছে ক্লাব কেনায়। মন্ত্রীর সঙ্গে ওই ব্যক্তির সম্পর্ক সহ বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর করে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
রেশন দুর্নীতি মামলায় জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেপ্তার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছেন তাঁর প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক সহ একাধিক ঘনিষ্ঠ। তাঁদের বাড়িতে তল্লাশিও হয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, তাঁদেরই একজনের কাছ থেকে বিদেশের একটি ফুটবল ক্লাবে লগ্নি সংক্রান্ত কাগজপত্র মেলে। সেই নথি খতিয়ে দেখার পর তদন্ত অন্যদিকে মোড় নেয়। মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ ওই ব্যক্তি সম্পর্কে প্রাথমিক খোঁজখবরের পর ইডি জানতে পারে, সরকারি টেন্ডার প্রক্রিয়ায় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে রাজি করিয়ে নিজের পছন্দের রাইস মিলকে টেন্ডার পাইয়ে দিতে সাহায্য করেছেন তিনি।
“আরও পড়ুন : দিঘায় জ্যোতিপ্রিয়’র ঘনিষ্ঠদের ৪ হোটেলের ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক : সূত্র”
সংশ্লিষ্ট রাইস মিলগুলিও নির্ধারিত ওজনের চেয়ে কম পরিমাণে চাল বা আটা সরবরাহ করেছে। তারপর রেশন ডিলারদের কার্যত বাধ্য করা হয়েছে কম ওজনের সামগ্রী নিতে। কেউ বেঁকে বসলে তাঁকে মন্ত্রীর ভয় দেখানো হতো বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। এমনকী, এই ব্যক্তি রেশন দুর্নীতিতে ধৃত বাকিবুর রহমানের কাছ থেকেও বিভিন্ন সময়ে ‘কাটমানি’ খেয়েছেন। আরও জানা গিয়েছে, এভাবে আসা বিপুল নগদ বিনিয়োগের জন্য একাধিক কাগুজে বা ভুয়ো কোম্পানি খোলা হয়। পাশাপাশি বিপুল টাকা খাটানো হয় ব্যাঙ্ক ও শেয়ার বাজারে।
- সংবাদ সূত্র – বর্তমান পত্রিকা