হলদিয়া : বানিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বড়সড় উদ্যোগ নিল হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড। সংস্থাটি হলদিয়ায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে দেশের সর্ববৃহৎ প্রোপাইলিন এবং ফেনল উৎপাদন প্রকল্পটি রূপায়ন করতে চলেছে। এই বিনিয়োগের ফলে আগামী কয়েক বছরে (Haldia Job) কারখানাটিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে বিপুল পরিমাণে কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছেন হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেডের ডিরেক্টর ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার নভনিত নারায়ণ।
তিনি আরও জানিয়েছেন, “এই প্রকল্পটির কাজ আগামী ২০২৬ সালের গোড়াতেই শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর ফলে পূর্ব ভারতে পলিমার প্রসেসিং সেক্টরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে বিপুল মানুষের কাছে কর্মসংস্থানের সুযোগ এনে দেবে”। সংস্থা সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে দেশজুড়ে প্রোপাইলিন ও ফেনল-এর মতো রাসায়নিকের বিপুল চাহিদা রয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখেই রাসায়নিক উৎপাদনে দেশের সেরা হয়ে ওঠার লক্ষ্যে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস ওলেফিন রূপান্তর প্রযুক্তি (OCT)র ব্যবহারের মাধ্যমে হলদিয়ায় তাঁদের সর্ববৃহৎ রাসায়নিক উৎপাদন কারখানাটির স্থাপনা করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ এই আর্থিক বছরে (FY-23) হলদিয়া পেট্রোকেম এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র রাসায়নিক বিক্রী করেই প্রায় ৯৯৯ কোটি টাকা নিজেদের ঘরে তুলেছে। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, নতুন করে বিনিয়োগের ফলে বছরে ৩০০ কিলো টন ফেনল এবং ১৮৫ কিলোটন এসিটোন উৎপাদন করতে সক্ষম হয়ে সংস্থাটি। নভনিত জানান, “এই প্রকল্প রূপায়নের ফলে হলদিয়া পেট্রোকেমের কেমিক্যাল ব্যবসার অংক প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা ছুঁয়ে ফেলবে”।
সংস্থাটির মতে, রাসায়নিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে হলদিয়ায় এই বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ গত দুই দশকে ভারতে সর্ববৃহৎ লগ্নি। এই বিনিয়োগের ফলে আগামী দিনে প্রচুর পরিমাণে আনুসঙ্গিক কারখানাও গড়ে উঠবে। নারায়ণ জানান, “পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়িত হওয়ার সাথে সাথে, ডিজিটালাইজেশনের মতো ক্ষেত্রে বিপুল অগ্রগতি হবে। এটি ডাউনস্ট্রিম রাসায়নিক শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। রাসায়নিকের ওপর নির্ভরশীল মোট শিল্পকারখানার পরিস্থিতি খুব অল্প সময়ের মধ্যে অসাধারণ বৃদ্ধির সাক্ষী হবে”।
দেশের প্রথমসারির পেট্রোকেমিক্যালস প্রস্তুতকারী সংস্থা হলদিয়া পেট্রোকেম এই মুহূর্তে বছরে প্রায় ৭ লক্ষ টন ইথাইলিন উৎপাদন করেন। এক সময় এই হলদিয়া পেট্রোকেম চরম দূরবস্থার মুখে পড়েছিল। ২০১৪ সালে সংস্থাটি সাময়িক ভাবে উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। পরবর্তী কালে চ্যাটার্জি গ্রুপের হাত ধরে সংস্থাটি নতুন ভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। হলদিয়া পেট্রোকেমের উৎপাদন গতি পাওয়ার ফলে কেবলমাত্র পূর্ব ভারতে বিভিন্ন পলিমার উৎপাদন ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ এনে দিয়েছে বলে বনিক মহলের মত।