নন্দকুমার : বিয়ের পর থেকেই লাগাতার অত্যাচারে অতিষ্ঠ স্ত্রী দেড় বছরের শিশু পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে চলে আসে বাপের বাড়ি। কিন্তু নিস্তার নেই সেখানেও। অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে শ্বশুবাড়িতে এসে সবার অজ্ঞাতে স্ত্রীকে বেধড়ক মারধরের পর দেড়বছরের শিশুপুত্রকে খুন করে পালিয়েছে ঘাতক বাবা।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার (Nandakumar) থানার ইড়খা গ্রামে। পুলিশ ইতিমধ্যে হতভাগ্য শিশুটির দেহ উদ্ধারের পাশাপাশি গুরুতর জখম মা’কে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছে। সেই সঙ্গে ঘাতক বাবা’র সন্ধানে তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নন্দকুমারের মতিপুর গ্রামের ভাগবত পালের সঙ্গে কয়েক বছর আগে বিয়ে হয় ইড়খার বাসিন্দা মঞ্জুশ্রী’র (Manjushree)। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই প্রতিনিয়ত স্বামী তাঁকে মারধর করত বলে অভিযোগ জানিয়ে বছর দেড়েকের শিশুপুত্র দেবরাজকে সঙ্গে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসে মঞ্জুশ্রী।
কিন্তু সেখানেও নিস্তার ছিল না। মাঝে মধ্যেই শ্বশুর বাড়িতে এসেও স্ত্রীর ওপর চড়াও হত ভাগবত। এই নিয়ে একাধিকবার ভাগবতের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানালেও কোনও লাভ হয়নি। ইতিমধ্যে দাম্পত্য কলহের ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। সেই সঙ্গে একাধিকবার পুলিশেও অভিযোগ জানানো হয়েছে ভাগবতের বিরুদ্ধে। কিন্তু তাতেও দমবার পাত্র নয় ওই যুবক।
মঞ্জুশ্রীর পরিবারের দাবী, মঙ্গলবার ভাগবত তাঁর শ্বশুরবাড়িতে এসে সবার অগোচরে রাতের অন্ধকারে স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করে। স্ত্রী সঞ্জা হারালে এরপর রাগ গিয়ে পড়ে ছোট্ট শিশুর ওপর। তাঁর হাত ও পা দড়ি দিয়ে বেঁধে শিশুটিকে খুন করে বাড়ির পেছনে ফেলে দেয়। পরে মঞ্জুশ্রীর পরিবারের লোকজন বাড়ি এসে তাঁকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পরে বাড়ির পেছন থেকে শিশুটির মৃত দেহ উদ্ধার হয়।
এরপরেই খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহটিকে উদ্ধার করে। এই ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবীতে সরব হন এলাকাবাসীরা। নন্দকুমার থানার পুলিশ জানিয়েছে, “ইড়খা গ্রাম থেকে বছর দেড়েকের শিশুপুত্রের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনায় মৃত শিশুটির বাবার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ইতিমধ্যে দেহটিকে ময়না তদন্তের জন্য তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি অভিযুক্ত যুবকের সন্ধানে তল্লাশি শুরু হয়েছে”।