Friday, May 17, 2024
HomeNewsbeatPatashpur Tragedy : নারকীয় ঘটনা পটাশপুরে, ভালোবাসার দিনে স্ত্রীর কাটা মুণ্ডু নিয়ে...

Patashpur Tragedy : নারকীয় ঘটনা পটাশপুরে, ভালোবাসার দিনে স্ত্রীর কাটা মুণ্ডু নিয়ে যুবকের তান্ডব, প্রকাশ্যে এল এই যুবকের আরও এক কীর্তি !

- Advertisement -

পটাশপুর, পূর্ব মেদিনীপুর : ভালোবাসার দিনে এক নারকীয় ঘটনার সাক্ষী থাকল পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানার চিস্তিপুর গ্রাম। স্ত্রীর মাথা কেটে নিয়ে সেই কাটা মাথা নিয়েই বেশ কয়েক ঘন্টা রীতিমতো তান্ডব চালাল এই গ্রামের বাসিন্দা গৌতম গুচ্ছাইত(৩৫)। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ এই নৃশংস ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই রীতিমতো সরগরম হয়ে (Patashpur Tragedy) ওঠে গোটা এলাকা।  খবর পেয়ে পুলিশ এসে মৃত ফুলরানি গুচ্ছাইত (২৭) মৃত দেহ এবং কাটা মুন্ডুটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত গৌতমকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী রাখাল গুচ্ছাইত জানিয়েছেন, “এদিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ আচমকাই গৌতমকে প্রচন্ড চিৎকার চেঁচামেচি করে ছুটতে দেখে সবাই চমকে ওঠে। তখনই দেখা যায় স্ত্রীর কাটা মাথা এক হাতে এবং অন্য হাতে ধারালো কাতান নিয়ে গর্জন করছে গৌতম। এলাকাবাসীরা পেছন তাড়া করলে গৌতম ছুটে গিয়ে বাস রাস্তার ধারে পৌছায়। সেখানে নিজেই দড়ি দিয়ে ব্যারিকেড করে বলতে থাকে কখন পুলিশ আসে আমি দেখি। এই দেশ কতটা এগিয়েছে আমি দেখতে চাই”। রাখাল জানান, “গৌতমের হিংস্র চেহারা দেখে সবাই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। তাই কেউই ওর কাছে যেতে সাহস পাইনি। পরে এলাকা থেকে পুলিশকে ফোন করে খবর দেওয়া হয়”।

স্থানীয় সূত্রে খবর, গৌতম আর্থিক ভাবে বেশ দুর্বল ছিল। ছোট্ট ঝুপড়ি বাড়িতে স্ত্রী ও বাচ্চাকে নিয়ে সংসার। বাবা, মা ও দাদা বৌদিরা সকলে আলাদা ভাবেই বসবাস করত। সংসার চালাতে চিপস ভাজা সহ বিভিন্ন রকম মুখরোচক খাওয়ার বানিয়ে রাস্তার ঘুরে ঘুরে বিক্রী করত গৌতম। এদিন ঘটনার সময় বেশ কিছুটা চিপস ভাজা হয়েছিল। আরও কিছুটা চিপস ভাজার জন্য তৈরি রাখা ছিল। ঝুপড়ির বাইরে উনুনে এই চিপস ভাজার সময়ই কিছু নিয়ে বচসা বাধে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সময় বাড়ির ভেতর থেকে কাটারি তুলে এনে স্ত্রীর ওপরে হামলা চালায় অভিযুক্ত। সেখানেই স্ত্রীর রক্তাক্ত দেহ ফেলে রেখে কাটা মুণ্ডু হাতে নিয়ে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে বলতেই চিৎকার করতে করতে অভিযুক্ত বাস রাস্তায় ছুটে গিয়েছিল।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবী, এদিন সকাল থেকে সব চুপচাপ ছিল। গৌতমের মধ্যেও কোনও অস্বাভাবিকত্ব নজরে আসেনি। তারই মাঝে কখন গৌতম এমন নৃশংস কান্ড ঘটিয়েছে তা কেউ জানতে পারেনি। এই ঘটনার পর গৌতমও অসংলগ্ন ভাবে কথাবার্তা বলতে থাকায় গোটা ঘটনা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত রয়েছে। তবে প্রাথমিক ভাবে স্থানীয়দের অনুমান, স্ত্রীর আচরণ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করত গৌতম। তার জেরেই গৌতম এমন নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা সেই প্রশ্নই ঘুরে বেড়াচ্ছে সর্বত্র। তবে সব কিছু ছাপিয়ে স্থানীয়দের দাবী, অভিযুক্ত গৌতম যেন কিছুতেই আর ছাড়া না পায়।  

এই অভিযুক্ত গৌতমের আরও এক কর্মকান্ড প্রকাশ্যে আসার ঘটনা ঘিরে জোর চর্চা চলছে সর্বত্র। বছর ৩ বছর আগে ২০২১ সালের ১৯ মার্চ সকাল ১১টা নাগাদ আলিপুর চিড়িয়াখানায় সিংহের খাঁচায় ঢুকে পড়েছিল এই যুবকটি। সেই ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল রাজধানীতে। সিংহের হামলায় পায়ে চোট পেলেও পরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে সে। পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানার চিস্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা সেই গৌতম গুচ্ছাইত (৩৫)ই ভালোবাসার দিনে স্ত্রীর মুণ্ডু কেটে তান্ডব চালানো ঘাতক। এদিন ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরেই রীতিমতো তোলপাড় পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়। এই অভিযুক্ত কোনও ভাবেই যেন ছাড়া না পায় সেই দাবীতেই সরব হয়েছেন এলাকাবাসীরা।

অভিযুক্তের দাদা উত্তম গুচ্ছাইত জানান, “বছর ৩ আগে ভাই যখন সিংহের খাঁচায় ঢুকে পড়েছিল সেই সময় তাঁর মানসিক অবস্থা কিছুটা খারাপ হয়ে পড়েছিল। তবে পরে সে সুস্থ হয়ে যায়। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ফুলরানি গুচ্ছাইত (২৭) ছাড়াও এক ছেলে রয়েছে। ছেলেটি এই মুহূর্তে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। পরিবার চালাতে বর্তমানে হকারি করত গৌতম। কিন্তু আজ কি এমন ঘটল যে ভাই এভাবে স্ত্রীর মাথা কেটে নিয়ে তান্ডব চালাল তা পরিষ্কার নয়। এই ঘটনায় গোটা পরিবার হতভম্ব হয়ে গিয়েছে” বলে জানিয়েছেন তিনি। উত্তম আরও জানান, “ওদের পরিবারে তেমন কোনও সমস্যা কখনও নজরে আসেনি। আর পাঁচটা পরিবারের মতো সব স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু তার মাঝে ভাইয়ের এমন রূপ দেখতে হবে আমরা কল্পনাও করতে পারিনি”।

পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদ্বীপ ভট্টাচার্য জানান, “পটাশপুরে স্ত্রীর মুণ্ডু কেটে দেওয়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মৃতদেহটি ও কাটা মুণ্ডু উদ্ধার করে সেটিকে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কি কারনে এমন ঘটনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে”।

- Advertisement -
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments