নিউজবাংলা ডেস্ক : পঞ্চায়েত অফিসেই গড়ে উঠেছিল সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা সাজাহানের অবৈধ কারবার। কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্তে এবার উঠে এল এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জন্ম-মৃত্যুর জাল শংসাপত্র তৈরি করতেন ‘ভাই’। আর সেসব দেওয়া হতো সন্দেশখালি (Sandeshkhali) অঞ্চলের আগরহাটি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকেই। প্রধান থাকাকালীন তিনি এই কাজ শুরু করেন।
সেই সার্টিফিকেট নিয়ে বেকায়দায় পড়া বহু যুবক-যুবতী সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। এদিকে, চিংড়ি পাচার ও জমি দখল মামলায় সোমবার ইডির তরফে শাহজাহানকে আদালতে হাজির করানোর কথা।
সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত প্রধান থাকাকালীন আগরহাটি পঞ্চায়েতকে দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছিলেন ‘ভাই’। তাঁর উপর কারও কথা বলার ক্ষমতা ছিল না। এখানে কর্মরত সরকারি আধিকারিকরা তাঁর ভয়ে সিটিয়েই থাকতেন। অনিচ্ছা সত্ত্বেও, ভাইয়ের নির্দেশমতোই বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কাজে মদত দিতে বাধ্য হতেন কেউ কেউ।
জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়া হতো। দুই কেন্দ্রীয় এজেন্সি জেনেছে, আগরহাটি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে। সরকারি নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে একটি প্যাড ছাপিয়েছিলেন বাদশা। কেউ জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র নিতে এলে ওই প্যাডেই তার নাম, বাবার নাম, ঠিকানা প্রভৃতি লিখে সই দিতেন শাহজাহান। ওই সার্টিফিকেটের উপর কোনও সরকারি নম্বর থাকত না।
এমনকী, ওই সংক্রান্ত নথি নথিভূক্ত রাখা হতো না সরকারিভাবে। ফলে সরকার জানতেই পারত না, সংশ্লিষ্ট এলাকায় কতজনের জন্ম বা মৃত্যু হয়েছে। স্বভাবতই এই শংসাপত্রের কোনও আইনি স্বীকৃতি ছিল না। সেগুলি ‘জাল’ বলেই দাবি তদন্তকারীদের।
কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রের অভিযোগ, এভাবে দশ বছর ধরে নকল শংসাপত্র তৈরির কাজ চালিয়ে গিয়েছেন ‘ভাই’। স্কুলে ভর্তি বা চাকরির ক্ষেত্রে এই সার্টিফিকেট জমা দিয়ে সন্দেশখালির দুটি ব্লকের বহু তরুণ-তরুণী জানতে পেরেছেন সেগুলি জাল। ইডি জেনেছে, আকুঞ্জিপাড়ায় আশ্রয় নেওয়া বহু রোহিঙ্গাকেও জাল শংসাপত্র দিয়েছে শাহজাহান।
তদন্তে প্রকাশ, জন্ম- মৃত্যুর শংসাপত্রে যে সমস্ত হাসপাতালের নাম উল্লেখ থাকত সেগুলিরও কোনও অস্তিত্ব নেই। যদিও এজেপির জেরায় গোটা ঘটনা অস্বীকার করে গিয়েছেন শাহজাহান। কত জাল শংসাপত্র দিয়েছিলেন তিনি, তার হিসেব নিচ্ছে ইডি। একইসঙ্গে ভেড়ি ব্যবসা থেকে হাতানো নগদ টাকা শাহজাহান কলকাতার কয়েকজনের ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। ওই কোম্পানিগুলি সম্পর্কে তথ্যাদি পেয়ে গিয়েছে এজেন্সি। এবার সংশ্লিষ্ট মালিকদের ডাকতে চলেছে ইডি।
- তথ্যসূত্র – বর্তমান পত্রিকা