নিউজবাংলা ডেস্ক : সবে বৈশাখের শুরু ! তাতেই তীব্র দাবদাহে ফুটছে গোটা দক্ষিণবঙ্গ। বেলা একটু বাড়লে বাড়ির বাইরে থাকা দুষ্কর হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সবক’টি জেলার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি বা তার আশপাশে পৌঁছে যায়। তীব্র গরমে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পুরুলিয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। এক-দু’দিনের (Weather Update) মধ্যে পরিস্থিতি পরিবর্তনের কোনও আশ্বাস দেয়নি আবহাওয়া দপ্তরও। বরং তারা জানিয়েছে, আগামী শনিবার পর্যন্ত এই পরিস্থিতি চলবে।
আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, এদিন মেদিনীপুর, মগরা ও পানাগড়ে তাপপ্রবাহ ছিল। কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৪ ডিগ্রি। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি বা তার বেশি রেকর্ড করা হয়েছে দমদম, সল্টলেক, বাঁকুড়া, ক্যানিং, শ্রীনিকেতন, বর্ধমান, আসানসোল, পুরুলিয়া, কলাইকুণ্ডা, পুরুলিয়া, বারাকপুর ও সিউড়িতে।
এই আবহে রাজ্যজুড়ে স্কুলের সময় এগনোর দাবি তুলেছেন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। তাঁদের সংগঠন ‘শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চ’ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে আবেদন করেছে, সকালে স্কুলের জন্য নির্দেশিকা জারি করা হোক। পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় এনিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে এক পর্ষদকর্তা বলেন, ‘স্কুলগুলি ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। সেক্ষেত্রে যে শিক্ষক-শিক্ষিকারা দূর থেকে আসেন, তাঁদের ক্লাসগুলি পরের দিকে রাখা যেতে পারে।’
ইতিমধ্যে বর্ধমান জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ পড়ুয়াদের পর্যাপ্ত জলপানের জন্য এক ঘণ্টা অন্তর ‘ওয়াটার বেল’ চালু করার নির্দেশ দিয়েছে। প্রসঙ্গত, কেরলের সমস্ত স্কুলে এই পদ্ধতি চালু হয়েছে আগেই। বেসরকারি স্কুলগুলি অবশ্য ইতিমধ্যে স্কুলের সময়ে কিছু বদল ঘটিয়েছে। যেমন, সল্টলেকের আওয়ার লেডি কুইন অব দ্য মিশনস স্কুলে ক্লাস চলছে বেলা ১১টা পর্যন্ত। পার্ক সার্কাসের ডন বসকো স্কুলের অধ্যক্ষ বিকাশ মণ্ডল জানান, গরম পড়লে এমনিতেই স্কুল ছুটির সময় এগিয়ে আনা হয়। চন্দননগর সেন্ট জোসেফ কনভেন্ট স্কুলও সময় এক থেকে দেড় ঘণ্টা এগিয়ে এনেছে।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকালে বনগাঁ-মাঝেরহাট লোকালে গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন এক প্রৌঢ়। তাঁকে সহযাত্রীরা বামনগাছি স্টেশনে নামিয়ে দেন। সেখানেই তিনি মারা যান। তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিস। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানার রাঘবপুর পূর্বপাড়ার বাসিন্দা সেখ সাকিলা বিবি (৬২) অটোয় বসে সানস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে দুপুরে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় অলোকচন্দ্র কর্মকারের (৫২)। বাড়ি কাশীপুরের মানিহারা গ্রামে। তাপপ্রবাহ নিয়ে এদিন মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা নবান্ন থেকে জেলাশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কলে বৈঠক করেন।