নন্দীগ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর : ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্তে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের সঙ্গে লাগাতার অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছিল নন্দীগ্রামের দাপুটে তৃণমূল নেতা আবু তাহের, সেক খুশনবি ও সেক আমানুল্লার বিরুদ্ধে। এবার তাঁদের পাকড়াও করতে বৃহস্পতিবার সাত সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে নন্দীগ্রাম অভিযানে নামল সিবিআইয়ের প্রতিনিধি দল।
তবে সিবিআইয়ের আসার খবর আগাম পেয়েই গা ঢাকা দিয়েছেন ওই তিন তৃণমূল নেতা, এমনটাই খবর স্থানীয় সূত্রে। তাঁদের খুঁজে বের করতে তৃণমূল নেতাদের বাড়ি ঘিরে রেখেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী প্রতিনিধিদল। প্রসঙ্গতঃ গত বছরের ৩মে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরের দিন নন্দীগ্রামে ব্যাপক হামলার অভিযোগ উঠেছিল শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শতাধিক বাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি একাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
মারধর করা হয় বিরোধী দলের সমর্থকদের। সেদিন হামলাকারীরা যখন নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের চিল্লোগ্রামে ঢুকে তান্ডব চালাচ্ছিল সেই সময় নিজের বাড়ি বাঁচাতে রুখে দাঁড়ান বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতি। হামলাকারীরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করলে মাথায় গুরুতর চোট পান তিনি। গুরুতর যখম দেবব্রতকে কলকাতায় নিয়ে গেলে প্রায় ১৩ দিন বাদে চিকিৎসারত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
পরবর্তীকালে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যজুড়ে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই নন্দীগ্রামের চিল্লোগ্রামের ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয়। তদন্ত চলাকালীন দফায় দফায় নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট সেক সুফিয়ানের জামাই সহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপরেই গ্রেফতারি এড়াতে বারেবারে সিবিআইয়ের জেরা এড়িয়ে গিয়েছেন আবু তাহের সহ তাঁর সঙ্গীরা।
গত সোমবার শেষবার আবু তাহেরকে সিবিআই ডেকে পাঠালেও সেখানে যাননি তাহের। পরিবর্তে ইমেল মারফৎ কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তিনি জানান, টেলিফোনে জেরায় হাজির থাকবেন তিনি। এরপরেই সিবিআইয়ের তরফে হলদিয়া আদালতে তাহের সহ খুশনবি ও আমানুল্লার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। বৃহস্পতিবার তাঁদের বাড়িতে সিবিআই অভিযান শুরু হয়েছে।