Newzbangla Desk : আরজিকরে চিকিৎসক তরুণীর নৃশংস খুনের ঘটনায় পুলিশের তদন্তে বিস্তর গাফিলতির অভিযোগে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবীতে অনড় আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। এদিন ২২ জন চিকিৎসকের দল প্রায় দেড়ঘন্টা ধরে সিপি বিনীত গোয়েলের সঙ্গে বৈঠক করেন।
তদন্তে গাফিলতির দায়ভার (RG Kar Case) নিয়ে সিপিকে পদত্যাগের দাবী জানান তাঁরা। এরপর লালবাজার থেকে বেরিয়ে এসে আন্দোলনকারীরা জানিয়ে দেন, লালবাজারের পথে বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে থাকা অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার হচ্ছে। যদিও বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবীতে তাঁরা অনড় বলেই আন্দোলনরত চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন।
লালবাজার থেকে বেরিয়ে আসার পর আন্দোলনকারীরা জানান, “প্রায় দেড় ঘন্টা মিটিং হল। কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে সরাসরি তাঁর পদত্যাগের দাবী জানিয়ে ডেপুটেশান পড়ে শোনান হয়েছে। আমরা তাঁদের পরিষ্কার জানিয়েছি, ৯ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত আরজিকরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তার ব্যাখ্যা চেয়েছি। ১২ ও ১৪ তারিখে আরজিকরের ঘটনাস্থল নিয়ে পুলিশের ভূমিকার প্রশ্ন করেছি আমরা”।
আন্দোলনকারীরা জানান, “সিপি জানিয়েছেন, কিছু কাজে পুলিশ ফেলিওর হয়েছে। তবে নিহত চিকিৎসকের তদন্তে কোনও রকম ঘাটতি পুলিশ রাখেনি”। ডেপুটেশানে অংশ নেওয়া আর এক আন্দোলনকারী জানান, “আমরা বেরিয়ে আসার আগে সিপিকে সরাসরি প্রশ্ন করি উনি কি পার্সোনালি তাঁর কাজে সন্তুষ্ট। উনি দাবী করেছেন নিজের দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি তাঁকে সরে যেতে বলেন তাহলে তিনি নিজের পদ থেকে সরে যাবেন”।
এরপরেই আন্দোলনকারীরা জানিয়ে দেন তাঁরা সোমবার থেকে রাতভর বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে যে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছিলেন সেই অবস্থান তাঁরা তুলে নিচ্ছেন। তবে আরজিকরের ঘটনার প্রতিবাদে যে দাবী তাঁরা তুলেছেন তার ৩নং দাবীতে এখনও অনড় থাকছেন তাঁরা। তা হল কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগ। সেই দাবী থেকে তাঁরা এতটুকুও সরছেন না।
এর আগে সোমবার আরজিকরের জুনিয়র চিকিৎসকরা সিপির পদত্যাগের দাবীতে লালবাজার অভিযান কর্মসূচী পালন করেন। তাঁদের ঠেকাতে লালবাজারে যাওয়ার রাস্তার মুখে নজির বিহীন ভাবে ৯ ফুটের লোহার ব্যারিকেড চেন দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়। এরপরেই আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা পথেই বসে পড়েন। এই লোহার ব্যারিকেড তোলা না হলে তাঁরা ডেপুটেশান দেবেন না বলে জানিয়ে দেন।
নিজেদের দাবীতে অনড় চিকিৎসকরা রাতভর বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে অবস্থান চালিয়ে যান। অবশেষে মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ চাপে পড়ে চিকিৎসকদের দাবী মেনে লোহার ব্যারিকেড সরিয়ে নেয় পুলিশ। তারপরেই ২২ জনের প্রতিনিধি দল সরাসরি বিনীত গোয়েলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার পদত্যাদের দাবী পড়ে শোনান। এরপরেই বিপুল সংখ্যক মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে নজির বিহীন মানব বন্ধন করে তিলোত্তমার বিচারের দাবীতে সরব হয়েছেন।