নিউজবাংলা : সরকারী সফরে এসে কয়লা মাফিয়ার হোটেলেই উঠলেন কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রী (Coal Minister) প্রহ্লাদ যোশি। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। শুধু ওঠাই নয়, সেই হোটেলে রাত্রিবাস, এমনকী ইসিএলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকও করেছেন।
গত বুধবার দু’দিনের সরকারি সফরে দুর্গাপুর এসে পৌঁছন কেন্দ্রীয় কয়লা ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি। এসে অবৈধ কয়লা কারবারের বেতাজ বাদশা রাজু ঝায়ের বিলাসবহুল হোটেলে তিনি ওঠেন। সেখানেই বুধবার সন্ধ্যায় ইসিএলের শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ রিভিউ মিটিং করেন। সেই মিটিংয়ে নেওয়া হয় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। পরে ওই হোটেলেই রাত্রিবাস করেন মন্ত্রী।
দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের অবৈধ কয়লা কারবারের বেতাজ বাদশা হিসেবে পরিচিত রাজু ঝা। বাম আমল থেকে এখনও পর্যন্ত রাজু একাধিকবার পুলিসের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছে। তার নামে অসংখ্য মামলা ঝুলছে। রাজু ঝায়ের সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতা গত বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই।
বিধানসভা ভোটে একাধিকবার বিজেপির প্রচারে তাকে দেখা গিয়েছিল। যা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল বিজেপি। শিল্পাঞ্চলে ইসিএল ও সেইলের একাধিক বিলাসবহুল অতিথি নিবাস থাকতেও কেন সেই কুখ্যাত মাফিয়ার হোটেলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উঠলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ বেগতিক বুঝে বিজেপি দায় চাপিয়েছে ইসিএলের ঘাড়ে।
হোটেলটি রাজু ঝায়ের নামে আর নেই, এই বলে বিতর্কে জল ঢালার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু গত বছর দুর্গাপুর পুরসভা থেকে ইস্যু করা হোটেলের ট্রেড লাইসেন্সে রাজুর নাম রয়েছে। যদিও এই বিষয়ে রাজু ঝার তরফে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি৷ দুর্গাপুরের বিজেপি বিধায়ক তথা বিজেপি রাজ্য সম্পাদক লক্ষণ ঘড়ুই বলেন, মন্ত্রীর সফরটি সম্পূর্ণ সরকারি সফর। কেন তিনি ওই হোটেলে উঠলেন তা কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্ৰকই বলতে পারবে।
ইসিএলের তরফেও নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সিপিএম জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, সরকারি সফররত কয়লামন্ত্রী কয়লা মাফিয়া রাজু ঝায়ের হোটেলে উঠে সংবিধানের অমর্যাদা করেছেন।
রাজ্যের শ্রম ও আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, কয়লা মন্ত্রীর এই সফরে রাজ্যের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কয়লা মন্ত্রী কয়লা চুরির দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না। তৃণমূল রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসনদাসু বলেন, আমার রাজনৈতিক জীবনে দেখেছি কয়লা মন্ত্রীরা সরকারি অতিথি নিবাসেই থাকেন। কেন ওই বিশেষ হোটেলে মন্ত্রীকে থাকতে হল তা নিয়ে তো প্রশ্ন জাগবেই।
তথ্যসূত্র – বর্তমান পত্রিকা