Thursday, April 25, 2024
Homeদক্ষিণবঙ্গBalaram Karan : অনাথের নাথ বলরামের হার না মানা অদম্য জেদেই আজ...

Balaram Karan : অনাথের নাথ বলরামের হার না মানা অদম্য জেদেই আজ ওরা মাধ্যমিকে !

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img
- Advertisement -

ভূপতিনগর : আর পাঁচটা ছেলেমেয়েদের মতো সহজভাবে জীবন শুরু হয়নি নিলয়, পল্লব, সূচনা, শিউলিদের। বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে তাঁদের ঠাই হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর-২ ব্লকের পাঁউশি অন্ত্যোদয় অনাথ আশ্রমে। তারপর আশ্রমিক পরিবেশে বড় হয়ে ওঠা এবং জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার জন্য একটু একটু করে নিজেদের তৈরি করেছে তারা। এবার সেখান থেকেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসল ১৫জন আবাসিক।

এর মধ্যে অন্ত্যোদয় অনাথ আশ্রমের ৯ জন এবং স্নেহচ্ছায়া শিশু আবাসের ৬ জন পরীক্ষায় বসেছে। এদের মধ্যে ৪জন ছাত্র ও ১১জন ছাত্রী। ছাত্রদের মধ্যে নিলয় বর্মন, পল্লব মণ্ডল, সানি গিরি, রাজীব খাটুয়া রয়েছে। আর ছাত্রীদের মধ্যে রয়েছে সূচনা প্রধান, শিউলি আদক, অঙ্কিতা বাগ, লক্ষ্ণী শবর, সুস্মিতা বারিক।

এছাড়া আরও কয়েকজন ছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছে। এরা সকলেই পাঁউশি বৈকুন্ঠ স্মৃতি মিলনী বিদ্যাপীঠের ছাত্রছাত্রী এবং সেই স্কুল থেকেই পরীক্ষায় বসেছে। এদের মধ্যে কারও বাবা-মা নেই। কারও মা আছেন, বাবা নেই। কারও বাবা আছেন, তো মা নেই। বলরামের ছত্রছায়া না পেলে এরা কেউ ভেসে যেতে পারত অসামাজিক কাজের অন্ধকারে। কারও জীবন সংগ্রামের গোলক ধাঁধায় হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও ছিল। তবুও তারা হারায়নি।

এবার আশ্রমের আবাসিকদের মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যেতে হচ্ছে এগরা-২ ব্লকের অস্থি চকে। দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। আশ্রমের ভাড়ার গাড়িতে করে বৃহস্পতিবার বাংলা পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল তাঁরা। খুব ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারিয়েছে লক্ষ্মী শবর। তার বাড়ি ঝাড়গ্রামে। একটা সময় বিপাকে পড়েছিল।  পরে এক শুভানুধ্যায়ীর মাধ্যমে আশ্রমে আশ্রয় পায়।

এদিন পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে লক্ষী বলে, “সকলের কাছে মাধ্যমিক হচ্ছে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। কিন্তু ছোটবেলা থেকে এত কষ্টের সঙ্গে লড়াই করেছি তারপরে ভাবতেই পারিনি সকলের সঙ্গে বসে আমি সেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারব।” নিলয়ের কথায়, “বাবা-মা কেউ নেই ঠিকই। তবে আশ্রমে সকলের স্নেহে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছি। পরীক্ষা খুব ভালই হয়েছে।“ একই কথা বলেছে সানি গিরি নামে আরেক আবাসিক এবং মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।

আশ্রমের কর্ণধার বলরাম করণ (Balaram Karan) বলেন, ইচ্ছা ও চেষ্টা থাকলে প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে রেখে জীবনে যে এগিয়ে যাওয়া যায়, তার উজ্জ্বল উদাহরণ এই আবাসিক ছেলেমেয়েরা। আমরা পরীক্ষার্থীদের বিশেষভাবে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। আমরা তাদের পাশে রয়েছি। আবাসিক ছাত্রছাত্রীরা জীবনে এগিয়ে যাক, এটাই আমাদের কামনা। আমরা আশা করব, এরা আগামীদিনে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে তারা মানুষের সেবায় নিয়োজিত হবে।

গত বছর ওই আশ্রম থেকে যারা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল তারা সকলেই প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছিল। এবারও বহু বাধা পেরিয়ে আশ্রমে ঠাই পাওয়া আবাসিকেরা ভাল ফল করবে বলেই আশাবাদী আশ্রম কর্তৃপক্ষ।

- Advertisement -
spot_imgspot_img
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments