হলদিয়া : কেন্দ্রীয় আইনের প্রতিবাদে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে শুরু হয়েছে ট্রাক চালকদের ধর্মঘট। ইতিমধ্যেই হলদিয়ার গ্যাস রিফিলিং সংস্থা আইপিপিএল সহ ইন্ডিয়ান অয়েল এবং অন্যান্য সংস্থাতেই ছড়িয়ে পড়ছে বিক্ষোভের আঁচ। এর জেরে হলদিয়া থেকে (Haldia) রাজ্যের অন্যত্র পেট্রোল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের সরবরাহ মারাত্মক রকমের ধাক্কা খাচ্ছে বলে খবর। এর জেরে ইতিমধ্যেই বহু পেট্রোল পাম্প ড্রাই হয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
রান্নার গ্যাসের সরবরাহও যথেষ্ট অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে। সোমবারের পর মঙ্গলবার হলদিয়ার আইপিপিএল-এ গ্যাসের সিলিন্ডার ভর্তি গাড়ি নিয়ে যেতে রাজি হননি ট্রাক চালকরা। পুলিশ নামিয়ে পরিস্থিতি সামালের চেষ্টা হলেও ক্রমেই অবস্থা বেশ জটিল হয়ে উঠছে বলেই সূত্রের খবর। শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী পুলিশের চাপে পড়ে অনেক গাড়ি এলপিজি গ্যাস লোডিং করলেও তারা গাড়িগুলিকে আর রাস্তায় ছোটাতে সাহস পাচ্ছেন না। সম্প্রতি কেন্দ্র সরকারের চালু করা আইনের প্রতিবাদেই ট্রাক চালকদের এই প্রতিবাদ বলে জানা গেছে।
আনন্দবাজার অনলাইনে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী এই মুহূর্তে রাজ্য জুড়ে রাজ্যের প্রায় ২৫০০ পেট্রোল পাম্পের মধ্যে বহু পাম্প ড্রাই হয়ে গিয়েছে। চালকদের বাধায় দুর্গাপুর, আসানসোল, হলদিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের সর্বত্রই ইন্ডিয়ান অয়েল, এইচপিসিএল, বিপিসিএল-এ একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হলদিয়ায় এই মুহূর্তে কোনও সংগঠন জোটবদ্ধ ভাবে আন্দোলনে সামিল না হলেও বিভিন্ন সংস্থার ট্রাক চালকরা একজোট হয়ে এই আন্দোলনে পা মিলিয়েছেন বলে খবর।
প্রসঙ্গতঃ ‘হিট অ্যান্ড রান’-এর ঘটনায় নতুন আইনের বিরুদ্ধে ভারত জুড়ে বেশ কয়েকটি পরিবহণ সমিতি প্রতিবাদ করছে। ভারতীয় দণ্ডবিধিকে সরিয়ে আনা ভারতীয় আইন সংহিতা (বিএনএস)-য় বলা হয়েছে চালকের ভুলে গাড়ি দুর্ঘটনা হলে এবং সেটা পুলিশ বা প্রশাসনের কোনও আধিকারিককে না জানিয়ে যদি তিনি পালিয়ে যান, সে ক্ষেত্রে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড কিংবা ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। আগে আইপিসি বা ভারতীয় দণ্ডবিধিতে এই ধরনের মামলায় শাস্তির মেয়াদ ছিল দু’বছর। বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলির দাবি, এই আইনের ফলে চালকেরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন এবং তাঁদের উপর অন্যায় ভাবে শাস্তির কোপ পড়তে পারে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে পেট্রোল ডিজেলের সরবরাহে প্রভাবের আশংকায় পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক পেট্রোল পাম্পে গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছে। বিশেষতঃ কাঁথি এলাকার একটি পেট্রোল পাম্পে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন আতংকিত গাড়ি চালকরা। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক না হলে ট্রাক চালকদের এই বিক্ষোভ সাধারণ মানুষকে বড়সড় সমস্যার মুখে এনে দাঁড় করাবে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ থাকছে না।