নন্দীগ্রাম : নিজের মেয়ের ঘরেই সতীন হয়ে সংসার বাঁধল এক গৃহবধূ। যাওয়ার সময় স্বামীর ঘর থেকে নিয়ে গেল কয়েক কুইন্টাল চাল, সোনার গহনা, লেপ, মশারি। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীপুর গ্রামে। অগত্যা বিচার চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে হতভাগ্য স্বামী।
মহিলার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, মেয়ের বিয়ের আগে থেকেই ওই যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল গৃহবধূর। পরে যুবককে কাছে পাওয়ার লোভে নিজের নাবালিকা মেয়েকেই জোর করে প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেয়। তাতেও ঠিকমতো সম্পর্ক গড়তে না পেরেই অবশেষে লজ্জা ছেড়ে মেয়ের সতীন হয়ে প্রেমিকের ঘরে গেলেন ওই গৃহবধূ।
নন্দীগ্রাম থানার এক আধিকারীক জানান, ‘আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে নাবালিকার বিয়ের ঘটনা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১১ নভেম্বর স্বামীর অনুপস্থিতিতে জামাইকে বাড়িতে ডেকে পাঠায় ওই বধূ। তারপর দু’জনে মিলে বাড়ি থেকে দু’ ক্যুইন্টাল চাল, সোনার গয়না, লেপ, মশারি নিয়ে পালিয়ে যায়৷ বাড়িতে ফিরে এসে ঘটনার কথা জানতে পারেন স্বামী। সঙ্গে সঙ্গেই স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁর সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর তিনি নন্দীগ্রাম থানার দ্বারস্থ হন। তাঁর বাবা মা দু’জনেই রয়েছেন। বউমার এহেন কর্মকাণ্ড দেখে লজ্জায় মুখ ঢাকছেন তাঁরাও।
অভিযোগকারীর মা এদিন বলছিলেন, ‘ওই যুবক চুলের ব্যবসা করেন। তাঁর সঙ্গে বউমার সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সম্পর্ক বাঁচিয়ে রাখতে ১৫ বছরের নাতনির জীবনটাকে নষ্ট করে দিয়েছেন বউমা। নাতনি একটি স্কুলে পড়াশোনা করত। ৫ জুন জামাইষষ্ঠী ছিল। তার তিনদিন বাদে নাতনিকে নিয়ে আচমকা বেপাত্তা হয়ে যান বউমা৷ পরে জানতে পারি, নাতনির বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। শুনেই আমরা হতবাক হয়ে যাই। তারপরও ওরা দু’জনে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেননি৷ শেষপর্যন্ত জামাইয়ের সঙ্গে বউমা ঘর ছেড়েছেন। এখন সমাজে মুখ লুকানোর জায়গা পাচ্ছি না। চারিদিকে লোকজন এনিয়ে চর্চা করছেন। আমাদের দেখলে পড়শিরা মুচকি হাসছেন।’
অভিযুক্ত ওই জামাইয়ের বাড়ি ভগবানপুর থানার নারায়ণদাঁড়ি গ্রামে। তাঁর চুলের ব্যবসা। সেই সুবাদে নন্দীগ্রামে আসা যাওয়া…শ্রীপুর গ্রামে ওই বধূর সঙ্গে আলাপ-পরিচয়। কিছুদিন যেতে না যেতেই শুরু প্রেম। বেড়ে ওঠে ঘনিষ্ঠতাও। ওই বধূর দু’টি মেয়ে এবং এক ছেলে। বড় মেয়ের বয়স ১৫ বছর। ব্যবসায়ী যুবকের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক মসৃণ রাখতে তাঁর সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। গত ৯ জুন নাবালিকা মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে গিয়ে চার হাত একও করে দেন। গোটা পরিবারকে অন্ধকারে রেখেই তিনি এ কাজ করেছিলেন।
শ্রীপুর গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যা কনকলতা মিদ্যার স্বামী শুকদেব মিদ্যা বলেন, ‘এই ঘটনা সবধরণের শালীনতা পার করেছে। সামাজিক অবক্ষয়ের চূড়ান্ত নিদর্শন। ওই বধূর স্বামী আমাদের কাছে নিজের সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন। তাঁকে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দিই। সেইমতো তিনি থানার দ্বারস্থ হয়েছেন।’
সংবাদ সূত্র – বর্তমান পত্রিকা