নিউজবাংলা ডেস্ক, নয়াদিল্লি : ৬ বছরের রোলিকে মেরেও ‘মারতে’ পারল না দুষ্কৃতীরা ! রোলি বেঁচে থাকবে পাঁচজনের মধ্যে। দুষ্কৃতীদের একাধিক বুলেট তার প্রাণ কেড়ে নিয়েছি ঠিকই। তবে অন্যের শরীরে হার্ট, কিডনি, লিভার, কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে বেঁচে থাকবে ফুটফুটে ছোট্ট মেয়েটি।
রোলির এইসব অঙ্গে বাঁচবে কম করে পাঁচজনের জীবন। আর সেই সঙ্গে যোগ হল দিল্লি কিংবা এইএমসের ইতিহাসে অধ্যায়। নতুন সর্বকনিষ্ঠ অঙ্গদাতা হিসেবে স্বীকৃতি পেল রোলি প্রজাপতি। কারন মাত্র সাড়ে ছ’বছর বয়স রোলির। নয়ডায় বাড়ি। সম্প্রতি অজ্ঞাত পরিচয় কিছু দুষ্কৃতীর ছোঁড়া গুলি তার মাথা এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয়। কোমায় চলে যায় সে।
তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লির এইমসে। চিকিৎসকদের কোনও চেষ্টাই সফল হল না। ব্রেনডেথ হয়ে মৃত্যু হয় তার। আর সময় নষ্ট করেননি রোলির বাবা হরনারায়ণ ও মা পুনমদেবী। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে মেয়ের অঙ্গদানে অঙ্গীকার তাঁরা। সঙ্গে সঙ্গেই নিউরোসার্জন দীপক গুপ্তের উদ্যোগে রোলির হার্ট, কিডনি, লিভার এবং কর্নিয়া সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে সেগুলি অন্য শিশুর দেহে প্রতিস্থাপন করা হবে বলে এইমস সূত্রে খবর।
মেয়েকে হারানোর হাহাকার বুকে চেপেই হরনারায়ণ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন এইমসের চিকিৎসকদের। তিনি বলছিলেন, ‘আমার মেয়ে তো আর ফিরে আসবে না। ওর অঙ্গে আরও পাঁচজন শিশু বেঁচে উঠবে, এটাই আমার বড় পাওনা। তাই চিকিৎসক গুপ্তের পরামর্শ আমরা ফেলতে পারিনি।’ চোখের জল মুছতে মুছতে পুনমদেবী বলছিলেন, ‘ওরা আমার মেয়েকে মেরেছে ঠিকই৷ কিন্তু জীবন বাঁচিয়ে গিয়েছে পাঁচজন শিশুর। তাদের মধ্যেই রোলিকে দেখে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেব।’
দুষ্কৃতীরা কেনই বা রোলিকে মারতে গেল, তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু যেভাবে একটা শিশুকে গুলি করা হয়েছে, তা দেখে তাজ্জব চিকিৎসক মহল। তার ছোট্ট মাথাটা একরকম ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল একাধিক বুলেট। চিকিৎসক গুপ্তের কথায়, ‘গত এপ্রিল রোলিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। একরকম ব্রেনডেথ বাবা-মাঝে ব্লেনটি প্রায় ড্যামেজ হয়ে গিয়েছিল কন্ডিশন আমাদের আর কিছু করার ছিল না। পরে রোলির ব্রেনডেথ হয়েছে বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা পাশাপাশি তার অঙ্গদানের বিষয়েও বোঝানোর চেষ্ট করেন তাঁরা। তিনি বলেছেন, ‘বর্তমান সময়ে অঙ্গদানের গুরুত্ব বুঝে তাঁর রাজি হয়ে যান। সম্মতিপত্রে সইও করেন। তারপর চিকিৎসকের একটি দল রোলির অঙ্গ সংরক্ষণের প্রক্রিয় শুরু করে।