নিউজবাংলা ডেস্ক : কোনও রক্ষাকবচ না পেয়ে অবশেষে আজ বিকেল ৫.৪০টা নাগাদ কলকাতায় সিবিআই দফতর নিজাম প্যালেসে গিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রায় পৌনে ৪ ঘন্টা পেরিয়ে রাত্রি সাড়ে ৯টা নাগাদ সিবিআই দফতর ছাড়লেন পার্থবাবু। ২৪ ঘন্টার প্রতিবেদনে দাবী, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর পাশাপাশি তৎকালীন কমিটির ৫ সদস্যকে সামনে রেখে জেরা করেছে সিবিআই। মন্ত্রীর বয়ান রেকর্ড করেছে সিবিআই। তবে নিজাম প্যালেস ছাড়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তিনি। তাঁকে আবার ডাকা হবে কিনা সে সম্পর্কে এখনও কোনও বিবৃতি জানা যায়নি।
সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর নিজেই পার্থ চ্যাটার্জীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে ওই প্রতিবেদনে দাবী করা হয়েছে। কমিটির ৫ সদস্যকে আগেও নিজাম প্যালেসে ডেকে জেরা করা হয়েছিল। সেদিন তাঁদের বয়ান রেকর্ডও করা হয়। আজ সেই কমিটির সদস্যদের বক্তব্যের সঙ্গে মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জীর বক্তব্য মিলিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে চ্যানেলের প্রতিবেদনে দাবী করা হয়েছে। তবে এই সংবাদ প্রকাশ করার সময় পর্যন্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায় বেরিয়ে গেলেও কমিটির ৫ সদস্য নিজাম প্যালেসেই রয়েছেন বলে খবর।
সিবিআইয়ের সামনে মূল প্রশ্ন, কেন নিয়োগের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছিল? কমিটির বৈঠক কোথায় কোথায় হয়েছিল? কমিটির কাজ কি কি ছিল জানতে চায় সিবিআই। এছাড়াও কমিটির বৈঠক সম্পর্কে কি অবগত ছিলেন পার্থ? এমনই একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজে নিতেই টানা জেরা চলছে বলে খবর। অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে গতকাল রাত্রি ৮টার মধ্যে সিবিআইয়ের দফতরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর কোনও খোঁজ নেই বলেই দাবী সংবাদমাধ্যমের।
সূত্রের খবর, গতকাল পদাতিক এক্সপ্রেসে জলপাইগুড়ি থেকে এইচ ওয়ান কামরায় উঠেছিলেন ওঠেন মন্ত্রী পরেশ ও তাঁর মেয়ে। সকালে ট্রেন সময়মতো শিয়ালদহ স্টেশনে এলেও মন্ত্রী ও তাঁর মেয়ের দেখা মেলেনি। পরে জানা যায়, ভোর ৪.৫২তে বর্ধমান স্টেশনের ৫ নম্বর স্টেশনে নামেন পরেশ ও তাঁর মেয়ে। সকাল ৫.০৪টা নাগাদ বর্ধমান স্টেশন থেকে সাদা স্করপিও গাড়িতে চড়ে চলে যান মন্ত্রী ও তাঁর মেয়ে। এরপর তাঁরা কোথায় গেলেন তার কোনও খোঁজ মেলেনি এখনও।
ইতিমধ্যে গোটা ঘটনায় মুখ খুলেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। তার মতে, “কারও কোনও কাজে যদি সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয়ে থাকে তাহলে স্বাভাবিক ভাবে আইন আইনের পথে চলবে। দল এবং সরকারের সবাইকে দায়ী করা চলবে না। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের কাজে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতি হয়, কিছু মানুষ অসুবিধেয় পড়েন। আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালত যাদের নাম উল্লেখ করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে”।
অন্যদিকে এই বিষয়ে রাজ্যসরকারকে বিঁধে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানান, “প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী নিজেই জড়িয়েছেন। তিনি নিজের উদ্যোগে হাই পাওয়ার কমিটি গড়েছিলেন। শিক্ষামন্ত্রীর নিজের চেম্বারে। তাঁর একান্ত সহযোগীরাও এই ঘটনায় সরাসরি যুক্ত”। অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য, “প্রতিমন্ত্রী হয়ে চাকরী চুরি করতে হয়েছে”। যদিও আর এক তৃণমূল নেতা মন্ত্রী সৌগত রায়ের দাবী, “নাম জড়িয়েছে, কিন্তু নাম প্রমাণিত হয়নি। নাম প্রমাণিত হয়েছে কিনা সেটা আগে দেখুন। তারপর মন্তব্য করব”।
মোবাইলে নিউজ আপডেটপেতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ দিন, ক্লিক করুন Whatsapp