নন্দীগ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর : ১০ নভেম্বর রাতে নন্দীগ্রামের গোকুলনগরের করপল্লীতে তৃণমূলের শহীদ স্মরণের মঞ্চে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ৩ বিজেপী কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার বিকেল নাগাদ খেজুরি থেকে ওই বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। স্টেজে আগুন লাগানোর ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই এই বিজেপি কর্মীরা গা ঢাকা দিয়েছিল বলে পুলিশের দাবী। নন্দীগ্রাম থানার এক আধিকারীক জানিয়েছেন, ধৃত তিনজন সঞ্জীব মন্ডল, গৌরাঙ্গ মন্দল ও কার্ত্তিক বারিক। ধৃতদের সোমবার হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তৃণমূলের মঞ্চে আগুন লাগানোর ঘটনায় শনিবার ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এই অভিযোগপত্রে প্রথম নাম রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। এছাড়াও বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পাল, অশোক করণ, স্বদেশ দাস অধিকারী, মণ্ডল সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ মাইতি, সহ সভাপতি দেবাশিস দাসেরও নাম রয়েছে। অভিযোগ পেয়েই বিজেপি নেতাদের ধরতে শনিবার বিকেল থেকে ময়দানে নামে পুলিশ।
নন্দীগ্রাম থানা থেকে ৭টি দলে ভাগ হয়ে অভিযুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। রাতেই শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ মেঘনাদ পালের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। তবে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই এই তালিকায় নাম থাকা সকলেই গোপন আস্তানায় গা ঢাকা দিয়েছে বলে খবর। এরই মধ্যে আজকের ধৃত ৩ জন খেজুরিতে আত্মগোপন করে রয়েছে বলে জানতে পেরেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাঁদের পাকড়াও করে নন্দীগ্রাম থানায় নিয়ে আসে।
তবে মেঘনাদ পাল সহ অন্যদের এখনও কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। এদিকে শান্তিকুঞ্জ সূত্রে খবর, শুভেন্দু অধিকারীর নাম অভিযোগ পত্রে থাকলেও থানা থেকে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশ যায়নি। তবে মঞ্চে আগুন ও এফআইআর নিয়ে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি সাহেব দাসের অভিযোগ, নন্দীগ্রামে নাটক করছে তৃণমূল। ওদের লজ্জা থাকা দরকার। কে বা কারা ওই মঞ্চে আগুন দিয়েছে তাঁদের চিহ্নিত করে প্রকৃত দোষীদের না ধরে শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপির নেতৃত্বদের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গোকুলনগরের তৃণমূল নেতা স্বদেশ দাসের দাবী, “শহীদ দিবসের দিনে নন্দীগ্রামকে লাগাতার অশান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে গেছে বিজেপির নেতা কর্মীরা। সেদিনের একাধিক ভিডিও ফুটেজ দেখলেই বোঝা যাবে কারা সেদিন উস্কানিমূলক কথা বলেছিল। তৃণমূলের দেওয়া মালা শহীদ বেদী থেকে ছিঁড়ে ফেলেছিল। রাতে আগুন ধরিয়েছিল ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির মঞ্চে তা এলাকার সবাই জানে। ওরা তৃণমূলের কর্মীর ওপর চড়াও হয়েছে। লাগাতার হুমকি দিচ্ছে। এই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবী জানাচ্ছি”।