কাঁথি, পূর্ব মেদিনীপুর : আগামী শনিবার কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজের মাঠে তৃণমূলের মেগা সভা। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপ্সথিত থাকবেন। জেলা জুড়ে এক লক্ষ কর্মী জমায়েত হবে বলে দাবী তৃণমূল নেতৃত্বের। তবে সেই সভায় আমন্ত্রণ পাচ্ছেন না কাঁথি ও তমলুকের দুই তৃণমূল সাংসদ যথাক্রমে শিশির অধিকারী ও ছেলে দিব্যেন্দু।
সভাস্থল থেকে মাত্র কয়েক’শ মিটার দূরে অবস্থিত শান্তিকুঞ্জের এবার কোনও আমন্ত্রণ যাচ্ছে না বলেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। পরিবর্তে সেদিনের সভাস্থলের মূল টার্গেট শান্তিকুঞ্জ হয়ে উঠবে বলেই তৃণমূল নেতারা ইঙ্গিত করেছেন।
তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি’র দাবী, “এই সভা সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে। তবে কাউকে ডিস্টার্ব করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তৃণমূলের নেতা কর্মীরা রাজনৈতিক সৌজন্যতা দেখাবে। আমরা সভা থেকে দলের কথা বলব”।
সুপ্রকাশের দাবী, “তবে এটা যেহেতু রাজনৈতিক সভা তাই আমদের প্রতিবাদ থাকবে বিরোধী দলনেতার নানান কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে। আমরা মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাব। কেন্দ্রের শাসক দলের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার হব এটাই স্বাভাবিক। যদিও যেখানে সভা হচ্ছে তার চারপাশে কে কোথায় বসবাস করে এটা দেখা আমাদের কাজ নয়”।
সুপ্রকাশ এদিন স্পষ্ট করেই জানিয়ে দেন, “আমরা মনে করি না অধিকারী পরিবারে কেউ তৃণমূলের লোক রয়েছে। ওরা তৃণমূলের স্ট্যাম্প প্যাড ব্যবহার করে। কিন্তু ওরা তৃণমূলের সাংসদ হলেও কোনওদিনই তৃণমূলের জন্য বা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য কথা বলেন না”।
তাঁর দাবী, “বিধানসভা নির্বাচন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সহ সমস্ত জায়গাতেই দুই অধিকারী সাংসদ তৃণমূলের বিরোধীতাই করে গিয়েছেন। তাই এবারের সভায় আর সৌজন্যতা দেখিয়ে দুই সাংসদকে আমন্ত্রণ জানাব না”। সুপ্রকাশের দাবী, “আমরা ওনাদের দলের সাংসদ বলেই মনে করিনা। তাই এই সভায় অধিকারীদের আমন্ত্রণের কোনও প্রশ্নই ওঠে না”।
তবে কলেজ মাঠে তৃণমূলের সভা করার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্বরা। বিজেপির দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক অরূপ কুমার দাসের দাবী, “শান্তিকুঞ্জকে বিব্রত করতেই কলেজ মাঠে সভা করা হচ্ছে। ওদের আসল উদ্দেশ্য অধিকারীদের গালাগাল দেওয়া”।
তাঁর দাবী, “একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে কোনও ধরণের রাজনীতি ঢুকুক আমরা চাই না। ওরা সভায় লোক ঢোকানোর জন্য কলেজ পাঁচিলের একাধিক জায়গা ভেঙে দিয়েছে। কাঁথির মানুষ এখন তো হাসির খোরাক দেখছি। কাঁথিতে এখন কলকাতার নেতা নেত্রীরা ঘুরছেন। এঁদের সঙ্গে কাঁথির মানুষরা নেই। কারা পুরসভায় জবরদখল করে আছে সবাই বুঝে গেছে। কোনও উন্নয়নের কাজ নেই। শুধু বাইরে থেকে মানুষকে বয়ে এনে মাঠ ভরাতে হচ্ছে”।
অরূপের দাবী, “এঁরা অত্যন্ত নির্লজ্জ। সরকার বা তাঁদের দল আদালতকে মান্যতা দেয় না। সেটা ডিএ মামলা হোক বা শুভেন্দু অধিকারীর মামলা”। তাঁর মতে, “হাইকোর্ট. থেকে স্পষ্ট নির্দেশ আছে শান্তিকুঞ্জের সামনে মাইক বাজিয়ে কোনও ভাবেই ডিস্টার্ব করা যাবে না”।
অরূপের দাবী, “তবুও মাইক লাগিয়ে ওরা গালাগাল করবেন। তবে তৃণমূলের এই সভার বিরুদ্ধে বিজেপি কোনও পাল্টা সভা করবে কিনা জানতে চাইলে অরূপ জানান, “আমরা এখনও দলের ওপর তলার থেকে কোনও নির্দেশ পাইনি। দল নির্দেশ দিলে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব”।