নিউজবাংলা ডেস্ক : আবগারি দুর্নীতি মামলায় জড়িত অভিযোগে এবার ইডি’র হাতে গ্রেফতার দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে ইডি। তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে এদিন ইডি’র আধিকারীকরা অরবিন্দকে গ্রেফতার করেন। এর আগে দিল্লী হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন (Big Breaking) করেছিলেন কেজরিওয়াল। তবে সেই আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের পর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এটা দ্বিতীয় গ্রেফতার। তবে ভোটের মুখে বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারের ঘটনা ঘিরে দেশজুড়ে আলোড়ন পড়ে ঘিয়েছে। যদিও বিজেপির যুক্তি, এই ঘটনা প্রমাণ করছে দুর্নীতি করলে কেউ রক্ষা পাবে না। কর্মরত অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারের ঘটনা তারই প্রমাণ।
সূত্রের খবর, ২০২১ – ২২ অর্থবর্ষে দিল্লী জুড়ে মদের দোকানের লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রায় ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবী। এই ঘটনার তদন্তভার নেয় ইডি। এর আগে একই মামলায় মনীশ সিসোদিয়া, সত্যেন্দ্র জৈন, সঞ্জয় সিং, বিজয় নায়ার, কে. কবিতা গ্রেফতার হয়েছেন। তারপর বারেবারেই গ্রেফতার হওয়ার আশংকা জানান দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী। কেজরিওয়াল আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে দিল্লী হাইকোর্টে আবেদন করেন। আদালতে কেজরিওয়াল দাবী করেন, কোন মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে সেই বিষয়ের কোনও তথ্য প্রমাণ দেওয়া হচ্ছে না। সূত্রের খবর, জবাবে ইডি জানায়, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে বলেই এই বিষয়ে কোনও তথ্য জানানো যাচ্ছে না। তবে আদালতের কাছে তাঁরা তদন্তের তথ্য জানানোর পরেই আদালত কেজরিওয়ালের ওপর থেকে রক্ষা কবচ প্রত্যাহার করে নেয়।
দুই পক্ষের দীর্ঘ সওয়াল জবাবের পর অবশেষে কেজরিওয়ালের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় দিল্লী হাইকোর্ট। এরপর অরবিন্দের গ্রেফতার ছিল সময়ের অপেক্ষা মাত্র। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিশাল বাহিনী নিয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাড়িতে গিয়ে প্রায় ২ ঘন্টা ধরে তাঁকে জেরা করে ইডি। তবে শেষ পর্যন্ত তদন্তে সহযোগিতা না করার অভিযোগে অরবিন্দকে ইডি গ্রেফতার করেছে বলে খবর। এই বিষয়ে বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র সংবাদ মাধ্যমে জানান, “দিল্লীর শিক্ষামন্ত্রী মদের দোকানের লাইসেন্স পাইয়ে দিয়ে টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ। তাঁরা আজও আদালত থেকে জামিন পাননি। ওনারা অপরাধ করে না থাকলে নিশ্চয়ই ছাড়া পেয়ে যেতেন” বলে দাবী জানিয়েছেন তিনি।
তবে কেজরিওয়ালের গ্রেফতার খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন দিল্লীর আপ বিধায়করা। লোকসভা ভোটের ঠিক মুখে দাঁড়িয়ে দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতারের ঘটনা নিয়ে নিন্দার ঝড় বইয়ে দিচ্ছেন আপের বিধায়করা। এভাবে ভোটের ফলাফল বদল করা যাবে না বলেই আপ বিধায়কদের দাবী। আগামী কাল কেজরিওয়ালের জামিনের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে আপ। এই মামলার দ্রুত সুনানি করার আবেদন জানানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে বাংলার বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবী, “দুর্নীতির ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গেও এই দৃশ্য দেখতে পারি। এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর ভাইপোর মাথার ওপর ভগবানের আশীর্বাদ রয়েছে। তাঁদের ভাগ্য ভাল বলেই মনে হয়। তাঁরা কোনও জ্যতিষি দেখান বলেই মনে হয় এখনও পার পেয়ে যাচ্ছেন” বলেই মত প্রকাশ করেছেন সুকান্ত।