হলদিয়া : টেন্ডার দুর্নীতি মামলায় আচমকাই গ্রেফতার হলেন হলদিয়া পুরসভার (Haldia Municipality) প্রাক্তন চেয়ারম্যান শ্যামল আদক। শনিবার রাতে হলদিয়ার সুতাহাটা থানার পুলিশের তাঁকে গ্রেফতার করেছে বলে খবর। টেন্ডার দুর্নীতি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরেই তদন্ত চলছিল। ইতিমধ্যে শ্যামলের গ্রেফতারির ঘটনা নিশ্চিত করেছে হলদিয়া মহকুমা পুলিশ। তবে ঠিক কোন কারণে তাঁকে গ্রেফতার করা হল সে বিষয়ে পুলিশের তরফে কিছুই জানা যায়নি। আজ রবিবার তাঁকে হলদিয়া আদালতে তোলা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, শ্যামল আদক হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান থাকা কালীন একাধিক টেন্ডারে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এই মর্মে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর থানায় শ্যামলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন এক ব্যবসায়ী। ঘটনার তদন্তে গঠিত হয় স্পেশাল ইনভেস্টিগেশান টিম। হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একঝাক পুলিশ আধিকারীক এই মামলার তদন্তে নিযুক্ত হয়। হলদিয়া পুরসভা থেকে বহু নথি বাজেয়াপ্ত হয়।
তবে এই মামলার তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বারেবারে ডাকা হলেও শ্যামলকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি হয়। গ্রেফতারি এড়াতে গা ঢাকা দেয় শ্যামল। এরপর তাঁর নামে হুলিয়া জারি করে জেলা পুলিশ। সেই সময় শ্যামলকে দিল্লীতে পুলিশের ঘেরাটোপে আত্মগোপন করতে দেখা যায়। শ্যামলকে পাকড়াও করতে দিল্লীতে উড়ে যায় এই জেলার পুলিশের একটি দল। তবে দিল্লী পুলিশের বেস্টনি থেকে শ্যামলকে আনা সম্ভব হয়নি।
এরই মাঝে হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন শ্যামল। আদালতের নির্দেশে তাঁকে রক্ষা কবচ দেওয়া হলেও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শ্যামলকে হলদিয়ায় হাজির হতে নির্দেশ দেয় আদালত। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে শ্যামল নভেম্বরের শেষ দিকে ভবানীপুর থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসেন। তবে তারপর থেকে শ্যামলের গতিবিধি নজরে আসেনি। শনিবার আচমকাই খবর আসে, শ্যামলকে সুতাহাটা থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আগামী দিনে ঘটনাটি কোন দিকে মোড় নেয় সেদিকেই তাকিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহল।
কারন, শ্যামল বর্তমানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিতি। শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পরেই শ্যামলকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপরেই শ্যামলও বিজেপিতে যোগ দেন। একাধিক জনসভায় শুভেন্দু দাবী করেছেন, শ্যামলকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ফাঁসানো হচ্ছে। যদিও জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবী, অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত করছে। এরসঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।